অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

শান্তিরক্ষায় নারীর অংশগ্রহণ ও সামনে থেকে নেতৃত্বদান আরও বাড়ানোর আহ্বান বাংলাদেশের

প্রকাশিত: ০৮:৫০ এএম, ২৪ অক্টোবর ২০২০ শনিবার   আপডেট: ০৮:৫৪ এএম, ২৪ অক্টোবর ২০২০ শনিবার

“যুদ্ধবিধ্বস্থ দেশগুলোতে যৌন ও লিঙ্গ-ভিত্তিক সহিংসতা দমন, পারষ্পরিক আস্থার সম্পর্ক তৈরি এবং দেশগঠনের কাজে ঐ সকল সমাজের নারীদের উৎসাহিত করতে নারী শান্তিরক্ষীগণের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ও অবদান রয়েছে। শান্তিরক্ষায় নারী নেতৃত্ব বাড়াতে শান্তিতে নারীর ভূমিকাকে সামগ্রিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনা করতে হবে”।

‘সামনে থেকে নেতৃত্বদান: জাতিসংঘ শান্তিরক্ষায় নারী নেতৃত্ব’ শীর্ষক এক ভার্চুয়াল ইভেন্টে দেওয়া বক্তব্যে এসব কথা বলেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা।
 
তবে তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে এই মর্মে যে, জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা কার্যক্রমসহ সামগ্রিক শান্তি প্রক্রিয়ায় এখনও নারীর অংশগ্রহণ খুবই কম।
 
জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের ল্যান্ডমার্ক রেজ্যুলেশন-১৩২৫ এর ২০তম বার্ষিকী স্মরণে যৌথভাবে অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে জাতিসংঘস্থ বাংলাদেশ, কানাডা ও যুক্তরাজ্য মিশন। 



২০০০ সালের ৩১ অক্টোবর নিরাপত্তা পরিষদে প্রথমবারের মতো শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষায় নারীর ভূমিকা শীর্ষক এই রেজুলেশনটি সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়।
শান্তিরক্ষায় নারীর অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অগ্রণী ভূমিকার কথা এই ফোরামে তুলে ধরেন রাষ্ট্রদূত ফাতিমা। 

শান্তিরক্ষায় নারীর অংশগ্রহণ বাড়াতে জাতিসংঘ ও অন্যান্য সদস্য রাষ্ট্রসমূহের চলমান প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানান রাষ্ট্রদূত ফাতিমা। 

শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে নারী’ শীর্ষক নিরাপত্তা পরিষদের সাম্প্রতিক রেজ্যুলেশন-২৫৩৮ এর উদাহরণ টেনে নারীর ব্যাপক অংশগ্রহণকে উৎসাহিত করতে:

  • - পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ 
  • - মিশনসমূহে নারীবান্ধব স্থান ও পরিবেশ তৈরি এবং 
  • - ‘নারী, শান্তি ও নিরাপত্তা (ডব্লিউপিএস)’ এজেন্ডার বাস্তবায়ন
  • - জাতীয় পর্যায়ে ডব্লিউপিএস এজেন্ডা বাস্তবায়নে গতিশীল প্রচেষ্টা গ্রহণ এবং 
  • - কান্ট্রি অফিসসমূহসহ জাতিসংঘ ব্যবস্থাপনায় ভ্যন্তরীণভাবে রেজ্যুলেশন কার্যকর করার আহ্বান জানান বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি।

ভার্চুয়াল এই ইভেন্টটিতে আরও বক্তব্য রাখেন জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল জ্যঁ পিয়েরে ল্যাক্রোস, কানাডার প্রতিরক্ষা প্রধান জেনারেল জোনাথন ভেঞ্চ, যুক্তরাজ্য মিশনের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স জোনাথন অ্যালেন। এছাড়া পশ্চিম সাহারা অঞ্চলে নিয়োজিত জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশন মিনুরসো এর ডেপুটি ফোর্স কমান্ডার, দক্ষিণ সুদানে নিয়োজিত মিশন ইউনিমিস এর পুলিশ কমিশনার ও সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকে নিয়োজিত মিনুসকা মিশন এর রিজিওনাল কমান্ডারসহ মাঠ পর্যায়ের বিভিন্ন নারী নেতৃত্ব।  

আলোচনা অংশের সমন্বয় ও এর সমাপ্তি টানেন জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের ২০০০ সালে নির্বাচিত সভাপতি, জাতিসংঘের সাবেক আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল ও জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের সাবেক স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত আনওয়ারুল করিম চৌধুরী। 

আলোচনা পর্বে আরও অংশ নেন জাতিসংঘে নিযুক্ত অষ্ট্রেলিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও আয়ারল্যান্ড মিশনের রাষ্ট্রদূত ও অন্যান্য প্রতিনিধিরা।

কূটনীতিক মিশন, সামরিক প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, এনজিও এবং সুশীল সমাজের বিপুল সংখ্যক অংশীজন অনুষ্ঠানটিতে অংশ নেন।

জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধির কার্যালয়ের প্রেস উ্‌ইংয়ের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছে। এতে আরও বলা হয়েছে,  নিরাপত্তা পরিষদের অস্থায়ী সদস্য হিসেবে বাংলাদেশ ২০০০ সালে রেজ্যুলেশন-১৩২৫ নেওয়ার ক্ষেত্রে নেতৃস্থানীয় ভূমিকা রাখে। বাংলাদেশ সরকার ডব্লিউপিএস এজেন্ডা বাস্তবায়নে ২০১৯ সালে একটি জাতীয় কর্ম পরিকল্পনাও গ্রহণ করে।

নারী শান্তিরক্ষীসহ বাংলাদেশ সর্বাধিক শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশ হিসেবে বর্তমানে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে অবদান রেখে চলেছে, জানায় স্থায়ী প্রতিনিধির কার্যালয়।