অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

পরিবেশ বাঁচাতে সোচ্চার ফ্রেন্ডস অব আর্থ

প্রতিশ্রুতি রক্ষা না করলে বিশ্বনেতাদের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৮:০৭ এএম, ৪ অক্টোবর ২০২১ সোমবার   আপডেট: ০৮:০৮ এএম, ৪ অক্টোবর ২০২১ সোমবার

বিশ্বনেতারা প্রতিশ্রুত সময়ের মধ্যে পরিবেশ দূষণ রোধে কার্যকর উদ্যোগ নিতে ব্যর্থ হলে তাদের বিরুদ্ধে হেগের আন্তজার্তিক আদালতে মামলার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। এ কথা জানিয়েছে যুক্তরাজ্যের শীর্ষ পরিবেশ বিষয়ক সংগঠন ফ্রেন্ডস অব আর্থ। 

বর্তমানে মামলাটি হেইগের আন্তর্জাতিক আদালতে বিবেচনাধীন রয়েছে। 

যুক্তরাজ্যে বসবাসরত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাইদের সংগঠন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাব ইউকের উদ্যোগে আয়োজিত জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক সচেতণতামূলক ক্যাম্পেইনে যোগ দিয়ে এমন দাবি করেন ফ্রেন্ডস অব আর্থ এর এই ক্যাম্পেইনার।  

শনিবার (২ অক্টোবর) সাউথ ইস্ট ইংল্যান্ডের ক্লাকটন-অন-সি’র বেলাভূমিতে প্রতিষ্ঠানটির ক্যাম্পেইনার জন ফুলার 'ক্লাইমেট জাস্টিস ফর বাংলাদেশ' ক্যাম্পেইনে যোগ দিয়ে হুশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ' উন্নত দেশগুলো ৮৬ শতাংশ কার্বন নিঃস্বরণের জন্য দায়ী, অন্যদিকে বাংলাদেশের মতো দেশগুলো মাত্র ১৪ শতাংশ কাবর্ন নিঃস্বরণ করে জলবায়ু পরিবর্তনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে'। 

"ধনী দেশগুলোর কারণেই বিশ্বের দরিদ্র ও স্বল্প আয়ের দেশগুলো জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে যে ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছে, ধনীদেশগুলোকেই এই ক্ষতির দায় নিতে নিতে হবে।"

আগামী নভেম্বরে গ্লাসগোতে জলবায়ু সম্মেলনকে সামনে রেখে বাংলাদেশের পক্ষে ক্ষতিপূরণ আদায় ও জলবায়ু পরিবর্তনে বাংলাদেশ কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সেই চিত্র আন্তর্জাতিক কমিউনিটির কাছে তুলে ধরতেই এই আয়োজন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবের পরিচালনা পরিষদের সদস্য সাংবাদিক তানভীর আহমেদ। 

ক্লাবের অপর পরিচালনা পরিষদের সদস্য থার্ড সেক্টর কনসালট্যান্ট বিধান গোস্বামী বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শর্তবর্ষ উদযাপনের বছরব্যাপী আয়োজনের অংশ হিসেবে লন্ডন থেকে একশত মাইল দূরে ক্লাকটন-অন-সি’র বেলাভূমিতে যুক্তরাজ্যে বসবাসরত বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাইদের নিয়ে এই আয়োজনের মূল উদ্দেশ্যই ছিলো আন্তর্জাতিক কমিউনিটির কাছে জলবায়ু পরিবতর্নে বাংলাদেশই বিশ্বের অন্যতম ক্ষতিগ্রস্ত দেশ সেই বার্তাটি পৌঁছে দেওয়া। 

আসন্ন জলবায়ু সম্মেলনে বিশ্বনেতারা যেন তাদের দেশের কার্বন ব্যবহার মাত্রা প্রতিশ্রুত সময়ের মধ্যে কমিয়ে এনে দরিদ্র দেশগুলোকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে, সেটাই ছিলো ক্যাম্পেনের লক্ষ্য। 

ক্যাম্পেইনে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন ব্যারিস্টার চৌধুরী হাফিজুর রহমান ও যুক্তরাজ্যে বসবাসরত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের অনেকেই।

শনিবার সকালে পূর্ব লন্ডনের গ্যান্টস হিল থেকে যুক্তরাজ্যে বসবাসরত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাইদের নিয়ে একটি বাস ক্লাকটন-অন-সি’র উদ্দেশ্য যাত্রা করে। ক্লাকটন-অন-সিতে পৌঁছেই অ্যালামনাইরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আদলে লাল রংগের বাস নিয়ে ক্লাইমেট জাস্টিস ফর বাংলাদেশ লেখা প্ল্যাকার্ড নিয়ে জলবায়ু পরিবর্তনে সচেতনতা তৈরি করতে আন্তর্জাতিক কমিউনিটির দৃষ্টি আকর্ষণ করে। 
 

এই ক্যাম্পেইনর অংশ হিসেবে  শিশু-কিশোরদের অংশগ্রহণে জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক বক্তৃতা ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় অংশ নেন অ্যালামনাইদের পরিবারের সদস্যরা। 

অ্যাডভোকেট মুজাহিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও র্যাফেল ড্র পুরস্কার বিজয়ী অ্যালামনাই ও শিশু-কিশোরদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন বিবিসি বাংলা বিভাগের সাংবাদিক মিজানুর রহমান খান, সাংবাদিক ইউনূস শেখ, পরিবেশবিদ শওকত আলী বেনু ও ক্লাবের পরিচালনা পরিষদের সদস্যরা। 

দিনভর নানা আয়োজনের মধ্যে সঙ্গীতশিল্পী মিলন বিশ্বাস ও আবৃত্তিশিল্পী তানজিনা নূর-ই সিদ্দীকীর কবিতা অ্যালামনাইদের মধ্যে প্রাণসঞ্চার সৃষ্টি করে। অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবের পক্ষ থেকে অ্যামানাইদের মধ্যে শুভেচ্ছা স্মারক গ্রহণ করেন মুক্তিযোদ্ধা ওয়ালিউর রহমান, ব্যারিস্টার নিজামুল হক, ফাতেহা পলি, পলি জাহান, ফাতেমা লিলি, ঝুমুর দত্ত, এম কে জিলানী, মোহাম্মদ মোকারম হোসেন, আলমগীর কবির, শাহিনা জাবিন, শায়লা শিমলা, রথীন্দ্র গোস্বামী, রবিউল ইসলাম ও শামীমা হাফিজ সহ অন্যরা।
 
ক্লাইমেট জাস্টিস ফর বাংলাদেশ ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠানটির পৃষ্ঠপোষক এ্যাডভোকেট শাহ আলম সরকার ও এ এইচ জেডে এর পরিচালক গোলাম মতুর্জাকে ধন্যবাদ জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবের পরিচালনা পরিষদের সদস্য ব্যারিস্টার কাজী আশিকুর রহমান। ক্যাম্পেইনে সার্বিক সহযোগিতার জন্য সঙ্গীতশিল্পী মিলন বিশ্বাস, চিত্রকর মাসুদ মিজান ও এনএইচএস ইংল্যান্ডের স্বাস্থ্যকর্মী রেহানা আক্তারকে বিশেষ সম্মাননা জানানো হয়।