অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

কারাবন্দীর ৬ মাস পর ঝুমন দাসের মুক্তি

ডিসট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, সুনামগঞ্জ

প্রকাশিত: ০৮:০১ পিএম, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২১ মঙ্গলবার   আপডেট: ০৮:০৭ পিএম, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২১ মঙ্গলবার

সুনামগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে থেকে মঙ্গলবার মুক্তি পান ঝুমন দাশ

সুনামগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে থেকে মঙ্গলবার মুক্তি পান ঝুমন দাশ

কারাবন্দির ছয় মাস পর জামিনে মুক্তি পেয়েছেন শাল্লার ঝুমন দাস। ফেসবুকে হেফাজতে ইসলামের বিতর্কিত নেতা মামুনুল হকের সমালোচনা করে গ্রেফতার হয়েছিলেন তিনি। সুনামগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মঙ্গলবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় কারাগার থেকে বের হন ঝুমন দাস।

এর আগে, গত ২৩ সেপ্টেম্বর বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ার কাজলের হাইকোর্ট বেঞ্চ ঝুমনের জামিনের আদেশ দেয়।

**হাইকোর্টে জামিন পেলেন ঝুমন দাশ

ঝুমনকে এক বছরের জন্য জামিন দেয়া হয়েছে। শর্তে আরও আছে,আদালতের অনুমতি ছাড়া তিনি যেতে পারবেন না সুনামগঞ্জের বাইরেও।

আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী জেড আই খান পান্না,সুব্রত চৌধুরী, নাহিদ সুলাতানা যুথি ও মো. আশরাফ আলী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মিজানুর রহমান।

গত ১৫ মার্চ সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে ‘শানে রিসালাত সম্মেলন’ নামে একটি সমাবেশের আয়োজন করে হেফাজতে ইসলাম। এতে হেফাজতের তৎকালীন আমির জুনায়েদ বাবুনগরী ও যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক বক্তব্য দেন।

এই সমাবেশের পরদিন ১৬ মার্চ মামুনুল হকের সমালোচনা করে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন শাল্লার নোয়াগাঁওয়ের ঝুমন দাস। স্ট্যাটাসে তিনি মামুনুলের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের অভিযোগ আনেন।

মামুনুলের সমালোচনাকে ইসলামের সমালোচনা বলে এলাকায় প্রচার চালাতে থাকেন তার অনুসারীরা। এতে এলাকাজুড়ে উত্তেজনা দেখা দেয়। বিষয়টি আঁচ করতে পেরে নোয়াগাঁও গ্রামের বাসিন্দারা ১৬ মার্চ রাতে ঝুমনকে পুলিশের হাতে তুলে দেন।

পরদিন বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর সকালে কয়েক হাজার লোক লাঠিসোঁটা নিয়ে মিছিল করে হামলা চালায় নোয়াগাঁও গ্রামে। তারা ভাঙচুর ও লুটপাট করে ঝুমন দাসের বাড়িসহ হাওরপাড়ের হিন্দু গ্রামটির প্রায় ৯০টি বাড়ি, মন্দির। ঝুমনের স্ত্রী সুইটিকে পিটিয়ে আহত করা হয়।

এরপর ২২ মার্চ ঝুমনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করে শাল্লা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুল করিম।

শাল্লায় হামলার ঘটনায় শাল্লা থানার এসআই আব্দুল করিম, স্থানীয় হাবিবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিবেকানন্দ মজুমদার বকুল ও ঝুমন দাসের মা নিভা রানী তিনটি মামলা করেন। তিন মামলায় প্রায় ৩ হাজার আসামি। পুলিশ নানা সময়ে শতাধিক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে। তারা সবাই এখন জামিনে।

শুধু জামিন পাচ্ছিলেন না ঝুমন দাস। বিচারিক আদালতে পাঁচ দফা তার জামিন আবেদন নাকচ করেন বিচারক। বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন অধিকারকর্মী, বুদ্ধিজীবী ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনা চলছিল। এর মধ্যে জামিনের জন্য হাইকোর্টে আবেদন করেন ঝুমন দাস।