অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

সরকারি জমিতে সাবেক এমপির অবৈধ মার্কেট, তদন্তে কমিটি 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, পাবনা

প্রকাশিত: ০৬:৪৩ পিএম, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২১ সোমবার  

পাবনার নগরবাড়িতে সরকারি জমি দখল করে সাবেক সাংসদ খন্দকার আজিজুল হক আরজুর গড়ে তোলা অবৈধ বাজারের বিষয়ে তদন্তে নেমেছে মন্ত্রী পরিষদ বিভাগের তদন্ত দল। সোমবার দুপুরে রাজশাহী বিভাগের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) আব্দুল মান্নানের নেতৃত্বে তদন্ত দল সরেজমিনে বাজারটি পরিদর্শন করে সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তর ও স্থানীয়দের বক্তব্য শোনেন। 

তদন্ত কমিটির অন্যান্য সদস্য পাবনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আফরোজা আক্তার, সড়ক ও জনপদ বিভাগের উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী আব্দুল মান্নাফ আকন্দ, পানি উন্নয়ন বোর্ড পাবনার উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী শাহিন রেজা ও জেলা নদী রক্ষা কমিটির সদস্য এস এম মাহবুবুল আলম এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

তদন্তকালে এমপি বাজারের দোকান মালিকরা এবং সাবেক সাংসদ খন্দকার আজিজুল হক আরজু বাজার গড়ে তোলার স্বপক্ষে কমিটির নিকট কোন বৈধ দলিলাদি উপস্থাপন করতে পারেননি। যমুনা নদী থেকে অবৈধভাবে বালি উত্তোলন করে বাজারের জন্য জায়গা ভরাট করার অভিযোগও স্বীকার করেন সাবেক সাংসদ আরজু। তবে, মানবিক বিবেচনায় বাজার উচ্ছেদ না করতে দাবিও জানিয়েছেন তিনি।

এদিকে, তদন্ত দলের আসার খবরে বাজারের বিভিন্ন দোকানের সাইনবোর্ড থেকে এমপি বাজার লেখা মুছে দেয় সাবেক সাংসদের লোকজন। দুপরে তদন্ত দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের জমির নথি ও ম্যাপ পর্যলোচনা করে সরেজমিনে অবৈধ এমপি বাজার ঘুরে দেখে অবৈধ দখলের বিষয়ে নিশ্চিত হন।

সড়ক ও জনপদ বিভাগ পাবনার উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী আব্দুল মান্নাফ আকন্দ বলেন, ১৯৫৩ সালে নগরবাড়ী ঘাটে জমি অধিগ্রহণ করে সড়ক ও জনপদ বিভাগ। পরে এক সময় তা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। চর জাগার পর জায়গাটি অবৈধ দখলে চলে যায়। কয়েকবার উদ্যোগ নিয়েও এখান থেকে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করা যায়নি।

তিনি আরো বলেন, বর্তমানে নগরবাড়ীতে আন্তর্জাতিক নৌবন্দর নির্মাণ কাজ চলছে। সরকারের প্রয়োজনেই অবৈধ দখলে থাকা জমি পুনরুদ্ধার প্রয়োজন।

তদন্তের কমিটির প্রশ্নের জবাবে পাবনা-২ আসনের সাবেক সাংসদ খন্দকার আজিজুল হক আরজু বলেন, আমি ব্যক্তিস্বার্থে কোন দুর্নীতি করিনি। তবে, স্থানীয় ব্যবসায়ীদের স্বার্থে বাজারটি গড়তে সহায়তা করেছি। এটি অবৈধ হলেও জনস্বার্থে তা উচ্ছেদ না করে স্বীকৃতি দেবার দাবিও জানান তিনি। 

তদন্তাধীন বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি না হলেও দ্রুততম সময়ে মন্ত্রী পরিষদ বিভাগে তদন্ত প্রতিবেদন পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন তদন্ত দলের প্রধান অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার আব্দুল মান্নান। তিনি বলেন, আমরা সকল নথি ও ম্যাপের সাথে বর্তমান পরিস্থিতি সরেজমিনে পর্যবেক্ষণ করেছি। সংশ্লিষ্ট সকলের বক্তব্য শুনেছি। প্রতিবেদনে তা বিস্তারিত উল্লেখ করা হবে।

প্রসংগত, পাবনার বেড়া উপজেলায় নগরবাড়ীতে যমুনা নদী পাড়ের সড়ক ও জনপদ ও খাস খতিয়ানের প্রায় ৮ একর জমি দখল করে এমপি বাজার নামে অবৈধ বাজার গড়ে ২৬৪টি প্লট করে বিক্রি করে দেন পাবনা ২ আসনের সাবেক সাংসদ খন্দকার আজিজুল হক আরজু। এ নিয়ে অপরাজেয় বাংলাসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে তদন্ত কমিটি গঠন করে মন্ত্রী পরিষদ বিভাগ।