অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতের মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

প্রকাশিত: ০২:০১ পিএম, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২১ বৃহস্পতিবার   আপডেট: ০২:০৬ পিএম, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২১ বৃহস্পতিবার

খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতের মেয়াদ নিয়ে সচিবালয়ে কথা বলছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতের মেয়াদ নিয়ে সচিবালয়ে কথা বলছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতের মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন ও উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে নিতে তার পরিবারের করা আবেদনটি এখনও প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। 
সচিবালয়ে বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী একথা বলেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের কাছে একটা আবেদন এসেছিল। আমরা যথাযথ প্রক্রিয়ায় আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছিলাম। আইন মন্ত্রনালয় যে অভিমত দিয়েছিল সে অনুযায়ী প্রক্রিয়া চলছে।’

তিন দফায় ছয় মাস করে ১৮ মাস মুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে আগে তাকে স্থায়ীভাবে মুক্ত করে দিতে পরিবারের পক্ষ থেকে আবেদন করা হয়। তবে আইন মন্ত্রণালয় বলেছে, স্থায়ীভাবে মুক্ত করার এখতিয়ার আদালতের।

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক গত ৭ সেপ্টেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে আবেদনের বিষয়ে মতামত জানান। তাতে তিনি মুক্তির মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়ানোর সুপারিশ করেন। প্রধানমন্ত্রী অনুমোদন করার পরেই এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক আদেশ জারি হবে।

এছাড়া আইনমন্ত্রী আরও জানান, ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারা অনুযায়ী খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানোর আবেদন পুনর্বিবেচনার সুযোগ নেই। বিদেশে যেতে হলে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে প্রথমে কারাগারে যেতে হবে। তারপর সেখান থেকে বিদেশে চিকিৎসার বিষয়ে আবেদন করতে হবে।

খালেদা জিয়া ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট ও জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের দুর্নীতির মামলায় সাজা ভোগ করছিলেন। শারীরিক নানা সমস্যা নিয়ে তিনি প্রিজন সেলে চিকিৎসাধীন ছিলেন। পরে সরকারের নির্বাহী আদেশে ২০২০ সালের ২৫শে মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল থেকে ছয় মাসের জন্য মুক্তি পান। 

পরে দফায় দফায় এই মেয়াদ আরও বাড়ানো হয়। দণ্ড স্থগিতের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ২৪ সেপ্টেম্বর। এর আগেই মুক্তির মেয়াদ আরও এক দফা বাড়ানোর আবেদন করলো তার পরিবার।

শর্তে বলা হয়, মুক্তিতে থাকার সময় খালেদা জিয়া নিজের বাসায় থেকে চিকিৎসা নেবেন। এ সময় তিনি দেশের বাইরে যেতে পারবেন না। এছাড়া, তিনি কোনো ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডেও অংশ নিতে পারবেন না বলে শর্তে উল্লেখ আছে। 

কারামুক্তির পর থেকে তিনি তার গুলশানের বাসা ফিরোজাতেই আছেন। মাঝেমধ্যে খালেদা জিয়ার ছোট ভাই, বোন, কিংবা ভাইয়ের স্ত্রী আসেন দেখা করতে। এ ছাড়া আসেন চিকিৎসকেরা। এছাড়া দলীয় নেতারাও তার সঙ্গে দেখা করেন।

এর মধ্যে করোনাভাইরাসেও আক্রান্ত হন তিনি। গত ১৪ এপ্রিল তার করোনায় আক্রান্তের খবর আসে সংবাদমাধ্যমে।
করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর প্রথম দিকে বাসায় থেকেই চিকিৎসা নেন খালেদা। পরে নানা শারীরিক সমস্যা দেখা দিলে ২৭ এপ্রিল তাকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে গত ৯ মে তার করোনা পরীক্ষায় নেগেটিভ আসে।

তারপরও শারীরিক সমস্যা থাকায় প্রায় দেড় মাস হাসপাতালে থাকতে হয় খালেদা জিয়াকে। কিছুদিন সেখানকার করোনারি কেয়ার ইউনিটেও (সিসিইউ) রাখা হয়েছিল তাকে। ৫৪ দিন চিকিৎসা শেষে ১৯ জুন গুলশানের বাসায় ফেরেন আসেন তিনি।

খালেদা জিয়ার বর্তমান শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল আছে বলে দল থেকে জানানো হয়েছে। এর মধ্যে করোনাভাইরাস প্রতিরোধী দুই ডোজ টিকা নিয়েছেন তিনি।

খালেদা জিয়আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, হাঁটুর জটিলতা ছাড়াও নানা ধরনের শারীরিক সমস্যা রয়েছে। ২০১৭ সালে যুক্তরাজ্যে তার চোখেও অপারেশন করা হয়।