অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

ভোলায় বিরল প্রজাতির ১০ ফুট লম্বা চিচিঙ্গা চাষ

খলিল উদ্দিন ফরিদ, ভোলা 

প্রকাশিত: ১০:৩৫ এএম, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২১ মঙ্গলবার   আপডেট: ১০:৩৭ এএম, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২১ মঙ্গলবার

দুর থেকে দেখলে মনে হবে অনেকটা সাপের মতো। কিছুটা কাছে গেলে সবুজ লাঠিও মনে হতে পারে। তবে এটা কোন সাপ কিংবা লাঠির নয়, বরং তা ১০ ফুট লম্বা বিরল প্রজাতির একটি মৌসুমী সবজি। যাকে কোন অঞ্চলে বলে রেখা, কোথাও কিচিন্দা আবার কারও কাছে কিচিঙ্গা। বইয়ের ভাষায় তাকে বলা হয় চিচিঙ্গা।

এরকম বিরল প্রজাতির চিচিঙ্গা চাষের সন্ধান পাওয়া গেছে ভোলার মনপুরা উপজেলার মনোয়ারা বেগম মহিলা কলেজের এক প্রভাষকের বাড়ির আঙিনায়। যা ইতোমধ্যেই সাড়া ফেলেছে উপজেলার পেশাদার কৃষকসহ সর্বমহলের মাঝে। এরকম একটি চিচিঙ্গা দিয়েই যে কোন পরিবারের এক বেলার তরকারি রান্না হয়ে যায়। 

করোনাকালিন মহাদূর্যোগে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় কলেজের অর্থনীতির প্রভাষক উৎপল মন্ডল তার বাড়ির আঙিনায় শুরু করেন মৌসুমি সবজির চাষাবাদ। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে সম্পূর্ন রাসায়নিক সার ও কীটনাশক মুক্ত সবজি চাষ করে তিনি অনেকটাই সফলতা পেয়েছেন। নিজের পরিবারের দৈনন্দিন তরকারির চাহিদা মিটিয়ে এখন বাজারেও বিক্রি সম্ভব বলে জানান তিনি।

যদিও ব্যবসায়িকভাবে নয়; মূলত শখের বসেই মাত্র দু’টি চিচিঙ্গার বীজ বপন করেন তিনি। খুলনার পাইকগাছা উপজেলায় অবস্থিত শশুড় বাড়িতে বেড়াতে গেলে তার শশুড় ৪ টি বীজ উৎপল মন্ডলকে উপহার দেন। তার শশুড় ভারতের চেন্নাই থেকে এই বিরল চিচিঙ্গা নিয়ে আসেন। 

উচ্চফলনশীল এই ফসলের চাষাবাদ প্রক্রিয়া সম্পর্কে প্রভাষক উৎপল মন্ডল জানান, আমার শশুড়ের উপহার দেয়া ৪ টি বীজ এনে তারমধ্যে দু’টি বীজ বপন করি আমি। বীজ বপনের এক সপ্তাহের মধ্যেই অঙ্কুর বের হয়। তিন সপ্তাহের মধ্যে মাচাং দিয়ে গাছকে পরিচর্যা করতে থাকি। ৭ থেকে ৮ সপ্তাহের মধ্যেই গাছে ফুল দেখা দেখা দেয়। ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে চিচিঙ্গা দ্রুত বড় হয়ে ১০ ফুট লম্বা হয়ে যায়। তবে এটি পাকা পর্যন্ত ১৫ ফুট লম্বা হয়।

তিনি আরও জানান, এই বিরল প্রজাতির চিচিঙ্গা গাছ ৯ থেকে ১০ মাস সময় পর্যন্ত জীবিত থাকে। জীবিত সময়ে একেকটি গাছ থেকে ১০ মন পর্যন্ত চিচিঙ্গা ফলানো সম্ভব বলে মনে করেন তিনি।

কলেজ শিক্ষক জানান, ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিভিন্ন কন্টেন্ট দেখে চাষাবাদ সম্পর্কে ধারনা নিয়ে তিনি এসব গাছের পরিচর্যা করছেন। ইন্টারনেটে দেখে গাছের উচ্চফলনশীন ‘থ্রীজি’ কাটিং দিয়েছেন বলে জানান তিনি। তাছাড়া নিজেই লিকুইড প্রাকৃতিক সার তৈরি করে গাছের পরিচর্যায় ব্যবহার করছেন।

এছাড়াও পোকা মাকড় থেকে রক্ষায় ফসলের গায়ে পলিথিন জড়িয়ে দিয়ে গড়ে তুলেছেন সুরক্ষা বলয়।

ব্যবসায়িকভাবে চাষাবাদের ক্ষেত্রে প্রভাষক উৎপল মন্ডল বলেন, এই প্রজাতির হাইব্রিড চিচিঙ্গা চাষাবাদ করে কম খরচে কম পরিশ্রমে সহজে বেশি লাভবান হবেন পেশাদার কৃষকরা। তাই ব্যবসায়িকভাবে চাষাবাদের জন্য পেশাদার কৃষকদের এগিয়ে আসার আহবান জানান তিনি।