অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

টমেটোর ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতে প্রয়োজনে আমদানি বন্ধ হবে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

প্রকাশিত: ০৫:০২ পিএম, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২১ সোমবার   আপডেট: ০৫:০৪ পিএম, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২১ সোমবার

সাতক্ষীরায় অসময়ে টমোটা উৎপাদন বাড়লেও দাম কম পাাচ্ছেন কৃষকরা।

সাতক্ষীরায় অসময়ে টমোটা উৎপাদন বাড়লেও দাম কম পাাচ্ছেন কৃষকরা।

টমেটোর ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে প্রয়োজনে ভারত থেকে আমদানি বন্ধ করে দেয়া হবে। এছাড়া, পরমাণু শক্তি ব্যবহার করে টমেটোসহ শাকসবজি ফলমূলের সংরক্ষণকাল বাড়াতে উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে বলে জানান কৃষিমন্ত্রী ড. মো: আব্দুর রাজ্জাক।

সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়া উপজেলার কামারালী ও বাকরা গ্রামে গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষের মাঠ পরিদর্শন ও কৃষকদের সাথে মতবিনিময় করেন কৃষিমন্ত্রী। সেখানে মাত্র ২৭ টাকা কেজিতে টমেটো বিক্রি করছে জানিয়ে কৃষকেরা এসময় আরও কিছু সমস্যার কথা তুলে ধরলে আমদানি বন্ধের কথা জানান তিনি। 

ড. রাজ্জাক আরো বলেন, সাতক্ষীরায় এ বছর ৮৪ হেক্টর জমিতে গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষ হয়েছে। এটিকে ৭০০ হেক্টরে উন্নীত করা হবে। এজন্য কৃষকদেরকে বীজ, সারসহ প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দেয়া হবে। 

স্থানীয় কৃষি বিভাগের হিসেবে, সাতক্ষীরায় এ বছর ৮৪ হেক্টর জমিতে গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষ হয়েছে। বারি হাইব্রিড-৪ ও বারি হাইব্রিড-৮ জাতের এ টমেটো চাষে যুক্ত আছেন ৫০০ কৃষক ও ১৫০০ শ্রমিক। গাছ থেকে ২-৩ বার টমেটো তোলা যায়। প্রতি হেক্টরে ফলন ৬২-৭০ টন। আর প্রতি বিঘায় কৃষকের নীট লাভ হয় ৯০ হাজার থেকে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা পর্যন্ত। 

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কৃষকদেরকে বীজ, চারা, বালাইনাশক প্রশিক্ষণ প্রদান করছে। এসময় সংসদ সদস্য মীর মোস্তাক আহমেদ রবি, সংসদ সদস্য মুস্তফা লুৎফুল্লাহ, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো: মেসবাহুল ইসলাম, সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক মো: হুমায়ুন কবির উপস্থিত ছিলেন। 

এরপর রবিবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাতে যশোর সার্কিট হাউজে যশোর ও খুলনা অঞ্চলের কৃষি বিভাগের কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় করেন কৃষিমন্ত্রী। এসময় উপকূলীয় এলাকায় কৃষি উৎপাদনের সম্ভাবনাকে পুরোপুরি কাজে লাগাতে কর্মকর্তা ও বিজ্ঞানীদেরকে নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, দেশে খাদ্যের চাহিদা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। একইসাথে বাড়ছে পুষ্টিসম্মত ও নিরাপদ খাদ্যের চাহিদা। এসব খাদ্যের যোগান অব্যাহত রাখতে হলে উৎপাদন আরও বৃদ্ধি করতে হবে। আর উৎপাদন বৃদ্ধির সবচেয়ে বেশি সম্ভাবনা রয়েছে দক্ষিণাঞ্চলের উপকূলীয় এলাকায়। এ সম্ভাবনাকে পুরোপুরি কাজে লাগাতে সবাইকে নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সাথে কাজ করতে হবে।

মন্ত্রী বলেন, আগে বছরে যেখানে একটি ফসল হতো, সেখানে এখন সীম চাষ, অসময়ের তরমুজ, মরিচ প্রভৃতি চাষ হচ্ছে। ঘেরে মাছ চাষের সাথে এসব ফসলের চাষ-এটিই কৃষির অভাবনীয় সাফল্য। ড. রাজ্জাক আরও বলেন, কৃষিতে আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি (প্রিসিসন এগ্রিকালচার) ও রোবট ব্যবহারের মাধ্যমে আগামী দিনের খাদ্য উৎপাদনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে। 

সভায় কর্মকর্তা ও বিজ্ঞানীরা দক্ষিণাঞ্চলের কৃষিতে সমস্যা, সম্ভাবনা ও পরিকল্পনা তুলে ধরেন। উঠে আসে ভবদহের দীর্ঘদিনের জলাবদ্ধতা সমস্যার কথাও। জলাবদ্ধতা নিরসনে বিএডিসির উদ্যোগের প্রশংসা করে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য বলেন, গতবছর বিএডিসি পাম্পের সাহায্যে পানি নিষ্কাশনে কাজ করেছে। এর ফলে মানুষের বাড়ি-ঘরে পানি উঠতে পারে নি। ভবদহের জলাবদ্ধতা নিরসনে বিএডিসি পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে কাজ করবে বলে এসময় জানান কৃষিমন্ত্রী।