অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

ফ্রিডা হিউজের সাথে আলাপচারিতা

ভাষান্তর: আসাদ আলম সিয়াম 

প্রকাশিত: ১২:৪৪ পিএম, ২৫ জুলাই ২০২১ রোববার   আপডেট: ১২:৪৭ পিএম, ২৫ জুলাই ২০২১ রোববার

[ ফ্রিডা হিউজ, বিখ্যাত কবি দম্পতি সিলভিয়া প্লাথ ও টেড হিউজের কন্যা।  ফ্রিডা নিজেও একজন কবি, লেখক ও চিত্রশিল্পী।  সিলভিয়া প্লাথের শেষ বই – ‘এরিয়েল’, স্বামী টেড হিউজের সম্পাদনায়, প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯৬৬ সালে, সিলভিয়ার মৃত্যুর তিন বছর পরে। ‘এরিয়েল’ এর পান্ডুলিপি সিল্ভিয়া মারা যাবার পর তাঁর পড়ার টেবিলে ‘এরিয়েল’ নামের একটা ফোল্ডারে পাওয়া গিয়েছিলো। টেড হিউজের সম্পাদিত বইটিতে সিলভিয়া যেভাবে তাঁর কবিতাগুলো নিজের ফোল্ডারে বিন্যস্ত করে গিয়েছিলেন, সেভাবে সাজানো হয়নি, টেড বেশ কিছু কবিতা  বাদও দিয়েছিলেন। সিলভিয়ার নিজের ক্রমে ও বিন্যাসে সাজিয়ে ২০০৪ সালে  ‘এরিয়েল’ এর আরেকটি পূর্নবিন্যস্ত সংস্করণ বের করে হার্পার কলিন্স। এই সংস্করণে ফ্রিডার একটা সাক্ষাৎকার সংযুক্ত করা হয়। এটি তারই অনুবাদ।]

আপনি বলেছেন যে আগে কখনো আপনি ‘এরিয়েল’ পড়েননি, প্রথম পড়েছেন মাত্র কিছুদিন আগে…

জ্বী ঠিকই শুনেছেন। সম্প্রতি, ‘এরিয়েল’ এর পুনর্বিন্যাসিত এই নতুন সংস্করণের ভুমিকা লিখতে গিয়ে আমি বইটি পড়ি।

আপনার উপর বইটি কি প্রভাব ফেলেছে?

কোন কবির মধ্যে, তা তিনি যেই হননা কেন, আমি যা সবচেয়ে পছন্দ করি তা হলো তাঁর প্রাণশক্তি, তাঁর সহজাত বোধ, তাঁর কোনো একটা বিষয়কে সবলে ধরে বিষয়টার দখল নেয়াকে – মুখোমুখি হওয়াকে। যেভাবে শব্দকে উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করে কবিরা শূণ্য থেকে একটা চিত্রকল্প তৈ্রী করেন, তাকে সারবত্তা দেন, আমি তার উচ্ছ্বসিত প্রশাংসা করি। নিজেদের আবেগের রাশ টেনে ধরে তাকে নিপুণ শৈলীতে, স্থির, নিয়ন্ত্রিতভাবে পরিচালিত করে যেভাবে কবিরা একটা পরিস্কার বার্তা পাঠককে পৌঁছে দেন, তা আমার কাছে শ্বাসরুদ্ধকর মনে হয়। ‘এরিয়েল’ এর মধ্যে আমি এর সবকিছুই খুঁজে পেয়েছি।

আপনার বাবা কি কখনো আপনাকে উচ্চস্বরে ‘এরিয়েল’ পড়ে শুনিয়েছেন অথবা এর কবিতাগুলো আপনার কাছে বিশ্লেষনের চেষ্টা করেছেন?

তিনি চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু আমি তাঁকে সে সুযোগ দেইনি। আমি তাঁর এবং আমার মায়ের কবিতাকে এড়িয়ে চলেছি, পাছে, আমি কবিতায় আমার নিজস্ব কন্ঠস্বর খুঁজে পাবার আগেই তাঁর বা মায়ের কবিতা দ্বারা প্রভাবিত হয়ে পড়ি, এই ভয়ে।

‘এরিয়েল’ এ এমন কি কোনো কবিতা আছে যার সাথে আপনি বিশেষ কোনো গাঢ় সম্পর্ক অনুভব করেন?

এর কবিতাগুলোর মধ্যে এরকম দুটো কবিতার কথা বলতে পারি। প্রথমটা হলো ‘মর্নিং সং’, কেননা এই কবিতাটা আমাকে নিয়েই লেখা। ফেলে আসা বছরগুলোতে বাবা প্রায়ই এই কবিতার কথা আমাকে বলতেন। কিন্তু তারপরেও আমি ধরে নিয়েছিলাম যে এটা সম্ভবত আমার ভাইকে নিয়ে লেখা, যতক্ষন না পর্যন্ত আমি নিজে কবিতাটা না পড়েছি এবং জানতে পেরেছি যে কবিতাটা কখন লেখা হয়েছে – অর্থাৎ আমার ভাইয়ের জন্ম হবার আগেই – ততক্ষন পর্যন্ত কবিতাটা যে আমাকে নিয়েই লেখা হয়েছে সে বিষয়ে আমি নিশ্চিত হতে পারিনি। এক সকালে সন্তানের কান্না শুনে মা যেভাবে সাড়া দিয়েছেন, কবিতাটা সেই মূহুর্তটাকে ধারণ করেছে, এবং এতো নিখুঁত আর স্পষ্টভাবে তা তুলে এনেছে যে আমার মনে হয়েছে যে ঘটনাটা আমার চোখের সামনেই ঘটছে এবং ইচ্ছে করলেই আমি চরিত্রগুলো হাত দিয়ে ছুঁয়ে দেখতে পারবো।

অপর কবিতাটা হলো ‘লেসবস’। আমার সাথে এই কবিতার সম্পর্ক হলো মূলত কবিতাটা যেভাবে লেখা হয়েছে, তার সাথে – যে শক্তি, যে লাগাম পড়ানো, সুনিয়ন্ত্রিত তীব্রতার মধ্য দিয়ে কবিতাটা লেখা – তার সাথে। উচুঁস্বরে যেভাবে কবিতাটা যখন আবৃত্তি করা হয়ে থাকে, মনে হয় সেখানে যেন তখন একটা তীব্র হাওয়ার ঘূর্ণির থাবায় সকল শক্তির সমাবেশ ঘটেছে। বিড়ালে ভরা একটা গাড়ীতে ভাইয়ের সাথে আমাকে নিয়ে ঘুরে বেড়াবার স্মৃতিও আমার মনে আছে; আমি কবিতায় উল্লেখ করা  এইরকম নানা সূত্রগুলোর সাথে নিজের সম্পৃক্ততার কথা ধরতে পারি।

যখন বড় হয়ে উঠছিলেন, মায়ের কোন ছবি আপনার মনে আঁকা ছিলো? সাধারণ মানুষ, আপনার বাবা, অথবা আপনার নিজের একান্ত স্মৃতি, এর মধ্যে কোনটা ঐ ছবি তৈরী করতে সবচেয়ে বেশী ভূমিকা রেখেছিলো?

কৈশোর উত্তীর্ণ হবার আগে পর্যন্ত আমার মা, আমার কাছে দেবদূতের মতো ছিলেন। আমি যেন নিরাপদ থাকি সেজন্য মায়ের আত্মা কিভাবে আমাকে সর্বদা পাহারা দিয়ে রেখেছে, তিনি যখন বেঁচে ছিলেন তখন তিনি কী গভীরভাবে আমাকে ভালোবাসতেন, আমার যত্ন নিতেন- ইত্যাদি বলে বলে আমার বাবাই আসলে মায়ের এমন একটা ছবি আমার মধ্যে তৈরী করতে সাহায্য করেছিলেন। মাকে নিয়ে আমার নিজস্ব কিছু স্মৃতি আছে বটে কিন্তু সেখানে মা তেমন সুখী নন। কারণ, মা মারা যাবার বছরখানেক আগে আমার নানু যখন বেড়াতে এসেছিলেন তখন তিনি মাকে কিছু কথা বলেছিলেন, যার ফলে মা খুব দুঃখ পেয়েছিলেন, এই স্মৃতিগুলো সেই সময়কে ঘিরে।

সাধারণ মানুষ আমার মাকে কি চোখে দেখেন কৈশোরে আমি প্রথমবারের মতো সে সম্পর্কে জানতে পারি। জনমানসে মায়ের যে ছবি রয়েছে তা আমাকে বিশেষ প্রভাবিত করতে পারেনি কেননা সেই সব ছবিতে বাবাকে যেভাবে ব্যবচ্ছেদ করা হয়েছে তা ছিলো অসম্ভব ও অযৌক্তিক কারণ যে স্নেহ আর ভালোবাসায় বাবা আমাদের বড় করেছিলেন, তার সাথে ঐ গণ ধারণার কোন মিলই নেই। যেভাবে আমার বাবাকে চিত্রিত করা হতো, এবং যেভাবে আমি তাঁকে চিনেছি তাদের মধ্যে আমি কোনই সম্পর্ক খুঁজে পেতাম না। তাই আমার এটা বিশ্বাস করবার যথেষ্ট কারণ ছিলো যে মায়ের সম্পর্কেও সাধারণ মানুষ যে ধারণা করে তাও সঠিক নয়, এবং একই ভাবে বিকৃ্ত। বছরের পর বছর ধরে আমি মায়ের যে ছবি একেঁছিলাম সেখানে– আমাদের আরো অনেকের মতই– তিনি ছিলেন দোষ-গুণ সম্পন্না একজন নারী– তাঁর যেমন ভীষন অভিমান ছিলো, তেমনি ছিলো আবেগজনিত জটিলতা; তিনি গভীরভাবে ভালোবাসতে পারতেন, আবার তীব্রভাবে ঘৃণাও করতে পারতেন। আমরা সকলেই এরকম বৈপরীত্যের সমষ্টি। আর এটা আমাদের উপরই নির্ভর করে আমরা আমাদের চরিত্রের কোন দিকটার উপর বেশী গুরুত্ব দেবো। আমার মা, তাঁর চরিত্রের ঋনাত্বক দিকগুলোর সাথে নিয়ত লড়াই করেছেন। যদিও শেষ পর্যন্ত তিনি তাতে পরাজিত হয়েছিলেন, তবুও তিনি কিন্তু তা তাঁর কবিতায় উপজীব্য করতে পেরেছিলেন।

আপনি ‘এরিয়েল’ এর পূর্ণমুদ্রিত সংস্করণে লিখেছেন যে আপনার “মা যা কিছু অনুভব করতেন, তার কোনটাই অপচয় করেননি”। এটা চমৎকার একটা অভিব্যক্তি এবং তাঁর স্মৃতির প্রতি এক গভীর হৃদয়স্পর্শী শ্রদ্ধার্ঘ্যও বটে। শিল্প ও জীবনের মধ্যে আপনার মা এই যে তীব্র আবেগঘন সম্মিলন ঘটিয়েছেন, আপনার নিজের কবিতা বা চিত্রকলাকে তা কিভাবে প্রভাবিত করেছে?

সত্যি বলতে কি, একদমই না। কারণ, খুব সাম্প্রতিক সময় ছাড়া, আমি এ সম্পর্কে আগে কিছুই জানতে পারিনি। ‘এরিয়েল’ এর পূর্নমুদ্রিত সংস্করণের জন্য আমি প্রথম যখন ‘এরিয়েল’ পড়ি তখন এই বিষয়ে আমার উপলব্ধি ঘটে। আমার নিজের চিত্রকর্ম ও কবিতা, আমি নিজে যা কিছু অনুভব করি, চিন্তা করি কিংবা দেখি, সে সম্পর্কে আমার নিজস্ব ব্যাখ্যা এবং  আমার আবেগ দ্বারা প্রভাবিত। আমার বাবা সবসময় আমকে উপদেশ দিতেন যে আমি যেন নিজের কাছে সৎ থাকি। আমি তাঁর এই উপদেশের ব্যাখ্যা করেছিলাম যে আমি যেন তাই করি যা আমার নিজস্ব প্রকৃতিজাত এবং তার উপর যেন অন্য কোনো শক্তি বা অন্য কোনো কিছু আরোপ না করি। আমার উপর আমার মায়ের যদি কোনো প্রভাব থেকে থাকে তা হলো নিজস্ব একান্ত দুঃসময়ে ‘ও পথে যেয়োনা’– এই অনুভবের এবং কাজের প্রতি তাঁর যে নিজস্ব নৈতিক দায়বদ্ধতা ছিলো, তার।  যা বোধকরি আমার মা ও বাবা – দু’জনের জিনেই ছিলো; কেননা তাঁরা দুজনেই তাঁদের কাজে নিষ্ঠাবান ও পরিশ্রমী ছিলেন।

সৃজনশীলতার ক্ষেত্রে, স্কট এবং জেল্ডা ফিটজেরাল্ডের পারস্পরিক সম্পর্ক নিয়ে অনেক কিছু লেখা হয়েছে। এমনকি এও অভিযোগ করা হয়েছে যে স্কট তাঁর স্ত্রীর জার্ণাল থেকে মুক্তভাবে লেখা ধার করেছেন। বলা হয়ে থাকে যে আপনার মা-বাবাও একই টেবিলের দু’পাশে বসে প্রায়ই তাঁদের কবিতা লিখতেন। এটা কি সৃষ্টিশীলতার ক্ষেত্রে তাঁদের দু’জনার অংশীদারিত্বের একটা নির্ভরযোগ্য ছবি তৈরী করে?

অবশ্যই করে। তবে আমাকে বলতেই হবে যে, আমার মতে, যেহেতু তাঁরা দুজনেই সাংঘাতিক প্রতিভাবান ছিলেন, পরস্পরের কাছ থেকে ‘ধার’ করবার বিষয়টা আমি সেই ছবিতে দেখিনা, যদি না যে কাগজের উপর লিখতেন সেটাকে ধর্তব্যের মধ্যে ধরা হয়– দু’জনেই অপরের ফেলে দেয়া কাগজের উলটো দিকে লেখালেখি করতেন। তবে, আমি আমার মায়ের চিঠি ও বাবার গল্প থেকে জেনেছি যে তাঁরা একে অপরকে লেখার ব্যাপারে উপদেশ দিতেন, অপরের কাজের ব্যাপারে নিয়মিতভাবে মন্তব্য করতেন; একে অপরকে উৎসাহ দিয়ে সহযোগিতা করতেন, আর একে অন্যের সাফল্যে যারপরনাই খুশী হতেন। তাঁদের যে কোনো একজনের সাফল্য যেন তাঁদের দু’জনেরই সাফল্য হয়ে উঠতো।

বাবা মারা যাবার আগের বছর, ১৯৯৭ সালে, বাবা যখন তাঁর বই ‘বার্থ ডে লেটার’ প্রকাশ করেন, তিনি তাঁর বইয়ে আমার মায়ের কবিতার কিছু সুত্র ব্যবহার করেন। না, ঠিক ‘ধার’ করা অর্থে নয়, বরং প্রত্তুতর হিসেবে যেন তাঁরা পরস্পরের সাথে কথা বলছেন, এমন অর্থে। কারণ, বাবার ‘বার্থ ডে লেটার’ এর কবিতাগুলো লেখা হয়েছিলো মায়ের সাথে তাঁর কথপোকথন হিসেবে।

আবার ফিটজারেল্ড প্রসঙ্গ। স্কট একবার তাঁর মেয়ে স্কটিকে লিখেছিলেন, “আবারো তোমার সাক্ষাতকার নেয়া হবে, এবং আমি তোমাকে আরো একবার বলছি যে দয়া করে তুমি তাদের সাথে আমার বা তোমার মায়ের ব্যাপারে আভাস-ইঙ্গিতেও কোনো কথা বলবে না। তুমি একবার স্তম্ভিত করা এই মন্তব্য করেছিলে যে তুমি শীগগিরই আমাদের জীবনী লিখতে যাচ্ছো…”। আপনার বাবা কি আপনাকে কখনো তাঁর বা আপনার মায়ের বিষয়ে সাক্ষাতকার এড়িয়ে চলবার জন্য এমন কোনো চাপ দিয়েছিলেন?

যখন আমার বয়স উনত্রিশ, আমার জীবনে আমি প্রথমবারের মতো সাক্ষাতকার দিতে যাচ্ছিলাম। বাবাকে আমি এ সম্পর্কে তাঁর কি ভাবনা তা জিজ্ঞাসা করেছিলাম; আমি ধারণা করেছিলাম যে  আমাদের পরিবার সম্পর্কে আমি কোনোভাবে কোনো কথা বলি, তিনি হয়তো তা নাও চাইতে পারেন। কিন্তু তাঁর প্রতিক্রিয়া ছিলো আমার ধারণার সম্পূর্ণ বিপরীত। যদিও সাধারণত যেভাবে সাক্ষাতকারগুলো নেয়া হয়ে থাকে সে বিষয়ে তাঁর সংশয় ছিলো এবং এ বিষয়ে তিনি আমাকে সতর্ক করেছিলেন, তবুও তিনি ভেবেছিলেন যে আমি যদি কোনো সাক্ষাতকার দিতে চাই, তবে তা দিতে পারি। তিনি শুধু অনুরোধ করেছিলেন যে আমি যেন কোনো নিষ্ঠুর মন্তব্য না করি। সে আমার জন্য সহজ বিষয়ই ছিলো। বহু বছর ধরে এটা আমার একান্ত নিজস্ব সিন্ধান্ত ছিলো যে আমি আমার মার সম্পর্কে – অথবা বাবা সম্পর্কে – কোনো আলোচনাই করবোনা। আবেগের কারণে, সেই সময়ে এসব নিয়ে আলোচনা করা আমার জন্য অসম্ভবও ছিলো। আমার বাবা মারা যাবার পরই আমি আমার এই নিয়ম শিথিল করি। আমি কিন্তু এখন আমার আগের সিদ্ধান্তের ব্যাপারে আক্ষেপ করি, কেননা আমি এখন বিশ্বাস করি যে একদম শুরু থেকেই সবথেকে উচুঁ ভবনের ছাদে দাঁড়িয়ে আমার চিৎকার করে বলা উচিত ছিলো যে আমি কতো সৌভাগ্যের অধিকারি যে আমি তাঁকে আমার বাবা হিসেবে পেয়েছি। বলা উচিত ছিলো যে কিভাবে তিনি আমাকে সাহায্য করেছেন, উৎসাহ দিয়েছেন। আমি তাঁর উপদেশ আর প্রশংসা চেয়েছি আর তিনি অসীম ধৈর্য্যের সাথে আমাকে আমার সাহিত্য সৃষ্টির এক ক্ষুদ্র প্রয়াস থেকে অন্য প্রয়াসে এগিয়ে যেতে সাহায্য করেছেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি আমাকে নিরন্তর স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন যে আমার মা বেঁচে থাকলে আমাকে নিয়ে কতো গর্ব অনুভব করতেন।

আপনার মায়ের কোন জীবনীটা আপনার সবচেয়ে পছন্দের?

আসলে, ওগুলোর কোনোটিই আমি কখনো পড়িনি, সেগুলো আমার পড়ার ইচ্ছাও নেই। যদিও যারা তাঁর জীবনীগুলো পড়েছেন তাদের কাছ থেকে আমি নির্ভরযোগ্য ভাবে খবর পেয়েছি যে অ্যান স্টিফেনসনের ‘বিটার ফেম’ রচনাটা মায়ের প্রকৃত জীবনের সবচেয়ে কাছাকাছি। আমার কাছে আমার মায়ের যে কোনো জীবনীই হবে তাঁর নিজের জীবন ও তাঁর জীবনে যেসব চরিত্র ছিলেন তাদের সম্পর্কে একজন সম্পূর্ণ অপরিচীতের একটা  ধারণা মাত্র।