অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

ব্যাটিং ব্যর্থতায় টাইগারদের হার, সিরিজে সমতা

স্পোর্টস ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৮:১৫ পিএম, ২৩ জুলাই ২০২১ শুক্রবার   আপডেট: ০৮:১৫ পিএম, ২৩ জুলাই ২০২১ শুক্রবার

অভিষেকেই স্বপ্ন দেখাচ্ছিলেন শামিম পাটোয়ারী। ছোট্ট এক ক্যামিওতে আশা জুগিয়েছিলেন। কিন্তু আগের্ ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় ম্যাচ যেখানে ছিল জয়ের জন্য সে ইনিংস মোটেও যথেষ্ট ছিল না। এর আগে ফিল্ডিংও খারাপ করে জিম্বাবুয়ের কাছে ২৩ রানে হেরেছে টাইগাররা। 

জিম্বাবুয়ের সঙ্গে মোট ১৬ টি-টোয়েন্টি খেলে এখন পর্যন্ত ৫ ম্যাচে হেরেছে টাইগাররা। তারমধ্যে ৪ ম্যাচই জিম্বাবুয়ের স্কোর ছিল ১৬০ এর বেশি। অর্থাৎ জিম্বাবুয়ে ১৬০ রানের বেশি করলেই বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানরা আর সফল হন না। যা অনেকটাই ভাবিয়ে তুলবে রাসেল ডোমিঙ্গোকে।

ম্যাচে এক আশ্বর্যজনক ঘটনা ঘটে ১৮ তম ওভারের পঞ্চম বলে। চাতারার করা বলে সাইফুদ্দিন ব্যাট চালাতেই শোনা যায় বেল পড়ার শব্দ। তার আউটের আবেদন করলে থার্ড আম্পায়ার দেখেন ব্যাট বা পায়ে স্পর্শ ছাড়াই বেল পড়ে গেছে। বাতাসের কারণে ক্রিকেটে এমন কয়েকবার হলেও পুরো স্ট্যাম্প নড়ে যাওয়া বিরল বলে মন্তব্য করেন ধারাভাষ্যকাররা। 

১৬৭ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে প্রথম থেকেই উইকেট বিলিয়ে আসেন টাইগাররা।  তৃতীয় ওভারে মুজারাবিন শর্ট বলে কাট করতে গিয়ে বোল্ড হন নাঈম শেখ। সেই ওভারেই কাভার অঞ্চলে সহজ ক্যাচ দেন সৌম্য সরকার। ফলে ১৭ রানেই সাজঘরে ফেরেন আগের ম্যাচে দুই ফিফটি পাওয়া ক্রিকেটার। 

তৃতীয় উইকেট জুটিতে পরিস্থিতি সামলে নেয়ার চেষ্টা করেছিলেন সাকিব ও শেখ মেহেদি। তবে ওয়েলিংটন মাসাকাদজার শিকার হয়ে ৪৫ থেকে ৫৩ রানেই মাঠ ছাড়েন সাকিব, মাহমুদউল্লাহ ও শেখ মেহেদি। 

দলীয় ৬৮ রানে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে ড্রেসিং রুমের পথ ধরেন নুরুল হাসান সোহানও। তারপরই মাঠে নামেন শামিম পাটোয়ারী। ১৩ বলে ৩ চার ও এক ছক্কায় ২৯ রান করেন এই বাঁহাতি। কিন্তু অন্য প্রান্তে সময়ে দাবি পূরণে ব্যর্থ হন আফিফ। তার ২৫ বলে ২৪ রানে আরও চাপে পড়ে দল।

সাইফুদ্দিনও চেষ্টা করেছিলেন তবে তার ১৫ বলে ১৯ ও জয়ের জন্য যথেষ্ট ছিল না। শেষ পর্যন্ত ১৪৩ রানে থামে বাংলাদেশের ইনিংস। 

এর আগে টস হেরে ফিল্ডিংয়ে নেমে একের পর এক ফিল্ডিং মিস টাইগাররা। এক রানের জায়গায় দুই রান হয়েছে। ক্যাচ ড্রপও করেছেন ফিল্ডাররা। ফলে ৬ উইকেটে ১৬৬ রানের লড়াকু সংগ্রহ পেয়ে যায় স্বাগতিকরা।

তাসকিন প্রথম ওভারে ৪ রান দেয়ার পর দ্বিতীয় ওভারে মাহেদি হাসানকে আক্রমণে নিয়ে আসেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। এবার তার ওপর চড়াও হন মাদভেরে। প্রথম দুই বলে ছক্কা আর চার হাঁকিয়ে বসেন। তবে এমন মার খেয়েও ঘাবড়ে যাননি মাহেদি।

ওভারের পঞ্চম বলে দারুণ এক ডেলিভারিতে মারুমানিকে (৩)  বোল্ড করেন টাইগার অফস্পিনার। ১১ রানে থামে প্রথম জুটি। 

এরপর বেশ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে খেলছিলেন রেগিস চাকাভা আর মেদভেরে। তবে ষষ্ঠ ওভারে বল হাতে নিয়েই দারুণ ফর্মে থাকা চাকাভাকে ফেরান সাকিব আল হাসান।

টাইগার অলরাউন্ডারকে সজোরে হাঁকাতে গিয়ে টাইমিং হয়নি, মিডঅফে শরিফুলের সহজ ক্যাচ হন চাকাভা (৯ বলে ১৪)। 

তৃতীয় উইকেটে পঞ্চাশোর্ধ্ব এক জুটি গড়ে তোলেন মাদভেরে আর ডিয়ন মায়ার্স। তবে টাইগার বোলারদের খুব আক্রমণ করে খেলতে পারেননি তারা। ব্যক্তিগত ফিফটি ছুঁতে মাদভেরে খেলেন ৪৫ বল।

শেষ পর্যন্ত ১৪তম ওভারে এসে এই জুটিটি ভাঙেন শরিফুল ইসলাম। তার বাউন্সি ডেলিভারি তুলে মারতে গিয়ে ডিপ পয়েন্টে মাহেদি হাসানের সহজ ক্যাচ হন মায়ার্স (২১ বলে ২৬)।

বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক সিকান্দার রাজা (৪)। সাকিবের করা ১৬তম ওভারে দ্রুত এক রান নিতে গিয়ে তিনি রানআউট হয়েছেন সৌম্যের দুর্দান্ত সরাসরি থ্রোতে।

পরে বিধ্বংসী হয়ে ওঠা মাধেভেরেকে শরিফুল ফিরিয়েছেন ১৮তম ওভারে এসে। বাঁহাতি এই পেসারের ওপর আগ্রাসী হতে গিয়ে এক্সট্রা কভারে আফিফ হোসেনের সহজ ক্যাচ হন মাদভেরে। ৫৭ বলে গড়া তার ৭৩ রানের ইনিংসে ছিল ৫টি বাউন্ডারির সঙ্গে ৩টি ছক্কার মার। শেষদিকে রায়ান বার্ল ১৯ বলে ৩৪ রানের ঝড়ে লড়াকু সংগ্রহ এনে দেন জিম্বাবুয়েকে।

বাংলাদেশি বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে সফল ছিলেন শরিফুল ইসলাম। ৩৩ রান খরচায় ৩টি উইকেট নিয়েছেন তিনি। একটি করে উইকেট নেন সাকিব আল হাসান আর শেখ মেহেদি। 

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

জিম্বাবুয়ে ১৬৬-৬: মাধেভেরে ৭৩ (৫৭), রায়ান বার্ল ৩৪ (১৯), ডিওন মায়ার্স ২৬ (২১)। শরিফুল ৩৩-৩, মেহেদি ১১-১, সাকিব ৩২-১।

বাংলাদেশ ১৪৩: শামিম পাটোয়ারি ২৯ (১৩), আফিফ হোসেন ২৪ (২৫), সাইফুদ্দিন ১৯ (১৫)। ওয়েলিংট্ন মাসাকাদজা ২০-৩, লুক জঙওয়ে ৩১-৩, মুজরাবানি ২২-১ চাতারা ২৪-১।