অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

সেদিনের ঘটনা নিয়ে নাছির মাহমুুদের ফেসবুক পোস্ট

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

প্রকাশিত: ০৭:১৫ পিএম, ৪ জুলাই ২০২১ রোববার   আপডেট: ০৮:১৫ পিএম, ৪ জুলাই ২০২১ রোববার

ছবি: নাছির ইউ মাহমুদ, পরীমনি

ছবি: নাছির ইউ মাহমুদ, পরীমনি

পরীমনির হত্যা ও ধর্ষণ চেষ্টার মামলা এবং তার সাথে মাদকের মামলায় রিমান্ড ও কারাগার থেকে জামিনে মুক্ত হয়েছেন ব্যবসায়ী নাছির ইউ মাহমুদ। মুক্তি পাওয়ার কয়েকদিন পর আজ (রবিবার, ৪ জুলাই) নিজের ফেসবুকে একটি দীর্ঘ পোস্ট দিয়েছেন তিনি। সেই পোস্টে তিনি লিখেছেন ‘প্রকৃতপক্ষে’ কি ঘটেছিল সেদিন।

নাছির ইউ মাহমুদের ফেসুবক পোস্ট-

সম্প্রতি আমাকে নিয়ে প্রচারিত একটি মিথ্যা ঘটনা নিয়ে পরীমনি যে অপপ্রচার করেছেন তা আপনারা ইতিমধ্যেই অবগত হয়েছেন। আপনাদের সদয় অবগতির জন্য সেদিন আসলে কি ঘটেছিল তা আমি বলতে চাই।

আমি ঢাকা বোট ক্লাবের কার্যকরি পরিষদের একজন সদস্য হিসেবে ক্লাবের ডিসিপ্লিন, মেনটেইনেন্স, কালচারাল এফেয়ার্স ও এন্টারটেইনমেন্টের দায়িত্বে নিয়োজিত। সেদিন রাত আনুমানিক ১২টার দিকে বোট ক্লাবেরই একজন সদস্যের সাথে ৩ জন অতিথি ক্লাবের বারে প্রবেশ করেন।

আমি সেসময় অন্য টেবিলে অন্য সদস্যদের সাথে বসে ছিলাম। আমি দূর থেকে খেয়াল করছিলাম তারা মদ্যপ অবস্থায়ই ক্লাবে প্রবেশ করেন। সে অবস্থাতে তারা আমাদের পাশের একটি টেবিলে বসেন এবং ওয়েটারদের ড্রিঙ্কসের বোতল দিতে বলেন। ওয়েটাররা এক বোতল ড্রিঙ্কস টেবিলে সার্ভ করেন এবং তা অতি দ্রুত তারা শেষ করে ফেলেন এবং আরো এক বোতল ড্রিঙ্কস টেবিলে আনান এবং সেই বোতলের অর্ধেকেরও বেশি শেষ করে ফেলেন। এসময় নিয়ম বহির্ভূতভাবে পরীমনি (যার নাম আমি পরে জেনেছি) একটি দামি ৩ লিটারের "ব্লু লেবেল"-এর বোতল বারের সেলফ থেকে হাতে নিয়ে টেবিলে আসেন এবং সঙ্গে করে নিতে চান। এসময় ওয়েটাররা তা নিতে বাঁধা প্রদান করলে পরীমনি ক্ষিপ্ত হন এবং ওয়েটারদের সাথে কথা কাটাকাটি ও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন এবং একপর্যায়ে টেবিলে রাখা প্লেট-গ্লাস অনবরত ছুড়ে ভাঙতে থাকেন।

যেহেতু আমি ক্লাবের ডিসিপ্লিনারি ইনচার্জ সেহেতু বিষয়টির ব্যাপারে ওয়েটাররা আমার সাহায্য চায়। তখন আমি পরীমনিদের টেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে বলি এই ড্রিঙ্কসের বোতল বিক্রি যোগ্য নয়। এ সময় পরিমনি আমাকে তুই-তাকারি করে অকথ্য গালিগালাজ শুরু করেন এবং আবারও টেবিলে রক্ষিত প্লেট, গ্লাস ছুড়ে মারতে থাকেন। আমি তাকে বার বার অনুরোধ করি যাতে তিনি এসব থেকে নিবৃত হন। কিন্তু পরীমনি তাতে কর্নপাত না করে আমাকে লক্ষ্য করে গ্লাস ছুড়তে থাকেন এবং একসময় একটি গ্লাস আমার ঘাড়ে এসে লাগে। পরে আরো গ্লাস ছুড়তে চেষ্টা করলে আমি তাকে শান্ত হতে বলি। সেই মুহুর্তে তার সাথে আসা জিমি (পরে নাম জেনেছি) আমার উপর চড়াও হয়। এ অবস্থায় ক্লাবের বাইরে দায়িত্বরত সিকিউরিটি স্টাফদের ডাকতে বাধ্য হই। কিছুক্ষণ পরেই ক্লাবের সিকিউরিটিরা উপস্থিত হন এবং বলি তাদের ক্লাব থেকে বের করে দাও, এ কথা বলে আমি ক্লাব ত্যাগ করি।

ঘটনার ৪-৫ দিন পর পরীমনি একটি ফেসবুক স্ট্যাটাস দেন এবং এর কিছুক্ষণ পর তিনি একটি সংবাদ সন্মেলন করেন। সেখানে আমাকে নিয়ে তার এহেন মিথ্যাচারে আমি হতভম্ব হয়ে পরি।

ইতিমধ্যেই সম্মানিত সাংবাদিক ভাই এবং ইলেকট্রনিক সংবাদমাধ্যম ও বিভিন্ন সোস্যাল মিডিয়ায় প্রকাশিত ভিডিও ফুটেজ ও প্রচারিত সংবাদের মাধ্যমে আপনারা ঘটনার চিত্র নিশ্চয়ই দেখেছেন এবং সত্যিকারের ঘটনাটি অনুধাবন করতে পেরেছেন।

দেশের আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ও মহামান্য আদালতের প্রতি আমার পূর্ণ আস্হা ও বিশ্বাস রয়েছে। আমার বিশ্বাস আমি ন্যায় বিচার পাবো।

পরিশেষে বলতে চাই, এহেন নাম সর্বস্ব অভিনেত্রীর সাজানো নাটকে আমার মতো একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তির সারাজীবনের অর্জিত সম্মান যেভাবে ধুলিস্যাৎ করা হয়েছে তা যেনো আর কারো জীবনে না ঘটে।