অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

পাবনায় অক্সিজেন সংকট, প্লান্ট নির্মাণ গাফিলতিতে ক্ষুব্ধ এমপি

রিজভী জয়, পাবনা

প্রকাশিত: ১০:৫৭ পিএম, ১ জুলাই ২০২১ বৃহস্পতিবার   আপডেট: ১২:১৬ এএম, ২ জুলাই ২০২১ শুক্রবার

পাবনায় দ্রুত গতিতে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। করোনা রোগীদের চিকিৎসায় জেলা সদরে জেনারেল হাসপাতালে বাড়ছে রোগীর চাপ। একই সাথে বাড়ছে অক্সিজেন চাহিদাও। কিন্তু ঠিকাদারের কাজের ধীরগতিতে এখনও চালু হয়নি সেন্ট্রাল অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা।

রোগীর চাপ বাড়ায় সংকট দেখা দিয়েছে সাধারণ অক্সিজেন সিলিন্ডারেরও। পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি হওয়ায় করণীয় নির্ধারণে হাসপাতালের চিকিৎসক ও দায়িত্বরত কর্মকর্তা কর্মচারীদের নিয়ে বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) জরুরী বৈঠক করেছেন সদর আসনের সংসদ সদস্য গোলাম ফারুক প্রিন্স। বৈঠকে সেন্ট্রাল অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থার কাজে ধীরগতি এবং বিকল্প উপায়ে বড় সিলিন্ডারে অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা করতে ঠিকাদারের অসহযোগীতায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন সংসদ সদস্য। 

পাবনা জেনারেল হাসপাতাল সূত্র জানায়, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে কেন্দ্রীয় অক্সিজেনের সরবরাহ ব্যবস্থার জন্য দরপত্র হয়। চলতি জুনের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এ পর্যন্ত ৪০ শতাংশ কাজও শেষ হয়নি। ঠিকাদার কোম্পানী স্প্রেকট্রার প্রতিনিধিদের হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বারংবার তাগাদা দিলেও তারা ধীরগতিতে কাজ করছেন। এমনকি, সদর আসনের সংসদ সদসও তাদের দ্রুত কাজ শেষ করতে অনুরোধ জানান। কাজ শেষ হবার আগে আপদকালীন ব্যবহারের জন্য এক বৈঠকে এক সপ্তাহের মধ্যে বড় সিলিন্ডারের মাধ্যমে পাইপলাইনে উচ্চ প্রবাহের অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা করে দেয়ার অঙ্গীকার করেন। অথচ দীর্ঘ এক মাসেও তারা তা সে কাজ করেনি।

হাসপাতাল কতৃপক্ষ জানায়, বর্তমানে হাসপাতালে ২১০টি অক্সিজেন আছে যা বিভিন্ন ওয়ার্ডে ব্যবহারের জন্য  যথেষ্ট হলেও করোনা চিকিৎসায় তা অপ্রতুল। জরুরী ভিত্তিতে ৫০ টি অক্সিজেন সিলিন্ডারের প্রয়োজন। পাশাপাশি, করোনা চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে নার্সদের জেনারেল হাসপাতালে দায়িত্ব পালনের নির্দেশনা দেওয়া হলেও তারা আসছেন না। এতে অধিক রোগীর চাপ সামলাতে জেনারেল হাসপাতালের স্বাস্থ্যসেবা কর্মীদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।

পাবনা জেনারেল হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সহকারী পরিচালক ডাঃ সালেহ মোহাম্মদ আলী বলেন, করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থার খোঁজ নিতে সদর আসনের সংসদ সদস্য গোলাম ফারুক প্রিন্স মহোদয় বৃহস্পতিবার জরুরী পরিদর্শনে আসেন। এ সময় হাসপাতালের সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে তাকে জানানো হয় । দীর্ঘ সময় তিনি পরিস্থিতি শুনে অক্সিজেন প্লান্টের ঠিকাদারের গাফিলতিতে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। অক্সিজেন সিলিন্ডার বাড়ানোর নির্দেশনা দেন।

গোলাম ফারুক প্রিন্স বলেন, করোনা সংক্রমণ শুরুর পর থেকেই অন্তত ৫ বার আমি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে দ্রুত কাজ শেষ করতে তাগাদা দিয়েছি। তারা নানা অজুহাতে অঙ্গীকার ভঙ্গ করেছে। আমাদের ধৈর্য্যের বাঁধ ভেঙে গেছে। শেষ বারের মত তাদের উচ্চ প্রবাহের অক্সিজেনের ব্যবস্থার কাজ দ্রুত শেষ করতে বলেছি। নয়তো এরপর থেকে, অক্সিজেনের অভাবে প্রতিটি মৃত্যুর দায় অক্সিজেন প্লান্ট নির্মানের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে নিতে হবে। প্রয়োজনে পাবনাবাসীকে সাথে নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা  নেয়া হবে।

জরুরী বৈঠকে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সহকারি পরিচালক ডা: সালেহ মোহাম্মদ, ডা: আকসাদ আল মাসুর আনন, ডা: জাহিদ হাসান রুমি, হেড এসিস্ট্যান্ট রুহুল আমিন,উপজেলা আওয়ামীলীগের অর্থ সম্পাদক হিরোক হোসেন, পৌর আওয়ামীলীগ নেতা কামরুজ্জামান রকি ।