অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

‘উঁকি’ দেওয়া মানুষটির ভাগ্যে কী ঘটেছে!

পলাশ মাহবুব

প্রকাশিত: ০২:১৬ পিএম, ২৯ জুন ২০২১ মঙ্গলবার   আপডেট: ০৫:১৬ পিএম, ২৯ জুন ২০২১ মঙ্গলবার

হারুনুর রশীদ

হারুনুর রশীদ

হারুনুর রশিদ। সত্তরের কাছাকাছি বয়স। দুই চোখের এক চোখে কম দেখেন। সেই চোখটি ঘোলা। চোখে যে চশমা সেটিও ততোধিক ঘোলা। হাঁটতেন কিছুটা খুঁড়িয়ে। শরীর জুড়ে দুর্বলতার ছাপ স্পষ্ট।

বিস্ফোরণের ঘটনায় সংবাদ শিরোনাম হওয়া মগবাজারের ভবনটির কেয়ারটেকার ছিলেন হারুনুর রশীদ। ছিলেন বলছি কারণ, ঘটনার পর থেকে বৃদ্ধ হারুনুর রশীদের কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। 

তার মেয়ে বাবার ছবি হাতে হাসপাতাল থেকে হাসপাতাল ছুটে বেড়িয়েছেন, কোথাও হদিস পাননি বাবার। তার মোবাইল ফোনটিও ঘটনার পর থেকে বন্ধ। মাঝে পেরিয়ে গেছে প্রায় দুইদিন।
কী পরিণতি হলো বৃদ্ধ হারুনুর রশিদের!

হারুনুর রশীদ থাকতেন বিধ্বস্ত হওয়া ভবনের একপাশের সিঁড়ির গোড়ার ছোট্ট একটি কক্ষে। একাই থাকতেন। নামাজের সময় বাদে দিনের বেশির ভাগ সময় ছোট্ট রুমটিতেই দেখা যেত তাকে। কেউ গেট দিয়ে ভেতরে ঢুকলে রুম থেকে গলা বাড়িয়ে উঁকি দিতেন। পরিচিত কেউ হলে গলা আবার ভেতরে ঢুকে যেত। 
তার সাথে দেখা-সাক্ষাত ওই উঁকিতেই সীমাবদ্ধ ছিল।

দুর্ঘটনার সময় হারুনুর রশীদ কোথায় ছিলেন জানিনা। তবে ভবনের সিঁড়ির গোড়ার ছোট্ট সেই রুমটিতে থাকার সম্ভাবনা বেশি। ভবনের যে অংশটি পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। তাহলে কি বৃদ্ধ হারুনুর রশীদ তার নিচেই চাপা পড়েছেন! বিধ্বস্ত সে অংশে এখনো উদ্ধার কার্যক্রম চলেনি বলে নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছেনা।

বিস্ফোরণের ঘটনার পর অন্ধকার হাতড়ে জীবন বাঁচাতে যখন হুড়মুড় করে নামছিলাম, বিধ্বস্ত সিঁড়ির গোড়ায় এসে চাচার কথা মনে হয়েছিল। কিন্তু মৃত্যুর মতো সেই অন্ধকারের মধ্যে উঁকি দেওয়ার কোনো সুযোগ ছিলনা। তাছাড়া আমরা ধরে নিয়েছিলাম, তিনি যেহেতু নিচেই ছিলেন হয়তো ইতিমধ্যেই বেরিয়ে গেছেন।

জানিনা আমাদের উঁকি দেওয়া কেয়ারটেকার চাচার ভাগ্যে কী ঘটেছে। দুর্ঘটনার সময় তিনি কি বেঁচে যাওয়ার পথ খুঁজে পেয়েছিলেন!