অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

জানিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার

জমে থাকা গ্যাস থেকে মগবাজারের ভয়াবহ বিস্ফোরণ, মৃত্যু বেড়ে ৭

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

প্রকাশিত: ১২:১২ এএম, ২৮ জুন ২০২১ সোমবার   আপডেট: ০২:১৩ এএম, ২৮ জুন ২০২১ সোমবার

পুলিশ এবং ফায়ার সার্ভিসের ধারণা জমে থাকা গ্যাস থেকেই এই ভয়াবহ বিস্ফোরণ

পুলিশ এবং ফায়ার সার্ভিসের ধারণা জমে থাকা গ্যাস থেকেই এই ভয়াবহ বিস্ফোরণ

রাজধানীর মগবাজার ওয়ারলেসে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে সাত জনে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এ তথ্য জানিয়েছেন ডিএমপির কমিশনার শফিকুল ইসলাম। 

ডিএমপি কমিশনার সাংবাদিকদের বলেন, 'ফায়ার সার্ভিসের যারা কাজ করেছে, তাদের সাথে কথা বলে যেটা বুঝেছি যে, এখানে কিছু গ্যাস জমে ছিল, এবং জমে থাকা এই গ্যাস বিস্ফোরণের কারণে আশপাশের সাতটা বিল্ডিং ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, দুইটা বাস বিধ্বস্ত হয়েছে ।'

এটা নাশকতা কি না- সাংবাদিকদের এই প্রশ্নে তিনি বলেন, 'আমার কাছে মনে হচ্ছে না। নাশকতা যদি হত, বোমা বিস্ফোরণ যদি হত, স্প্লিন্টারের আঘাতে মানুষ ক্ষতবিক্ষত হয়ে যেত। আশেপাশের আপনারা গাড়ি দেখেছেন, বাস দেখেছেন, বাসে স্প্লিন্টারের কোনো আঘাত লাগেনি। কাজেই এটা বলা যায়, এটা বোমার কোনো ঘটনা নয়, গ্যাস থেকেই বিস্ফোরণ ঘটেছে।'

ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক সাজ্জাদ বলেন, গ্যাস জমে এই বিস্ফোরণ হতে পারে বলে তারা ধারণা করছেন। তদন্তের পরই তা স্পষ্ট হওয়া যাবে।

**মগবাজারে বিস্ফোরণে ভবন ধস, মৃত্যু বেড়ে ৬

গবাজারে বিস্ফোরণে অপরাজেয় বাংলার সম্পাদক-নির্বাহী সম্পাদক আহত

**কী কারণে এই বিস্ফোরণ?

শরমা হাউসের ভবনটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এবং অরক্ষিত: ফায়ার সার্ভিস

রবিবার (২৭ জুন) সন্ধ্যা ৭টা ৩৪মিনিটে ঘটে যাওয়া এই বিস্ফোরণে ৪৮ জনকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়। এর মধ্যে বার্ন ইনস্টিটিউটে নেওয়া হয় ১২ জনকে। আহতদের মধ্যে ১০ জনের অবস্থা গুরুতর। এবং তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলছেন চিকিৎসকরা।

বিস্ফোরণ চিত্র-
৭৯ নম্বর আউটার সার্কুলার রোডের পুরনো একটি তিনতলা ভবনের দোতলায় সিঙ্গারের বিক্রয় কেন্দ্র ছিল। নিচতলায় খাবারের দোকান শরমা হাউস ও বেঙ্গল মিটের বিক্রয় কেন্দ্র। বিস্ফোরণে শরমা হাউস ও বেঙ্গল মিট চূড়ান্ত পর্যায়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে্

পাশের বিল্ডিংয়ের তৃতীয় তলায় অনলাইন নিউজ পোর্টাল অপরাজেয় বাংলার অফিস। বিস্ফোরণে অফিসের জানালার থাই গ্লাসের কাঁচ ভেঙে গুরুতর আহত হয় গণমাধ্যমটির সম্পাদক মাহমুদ মেনন ও নির্বাহী সম্পাদক পলাশ মাহবুব। দুজনেরই মাথায় এবং শরীরে বিভিন্ন অংশে কাঁচ ঢুকে যায়। তারা দুজনই প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাসায় ফিরে গেছেন। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অফিসের কম্পিউটার এবং অন্যান্য আসবাব। এই ভবনটির সিড়ি এবং সামনের অংশ ভেঙেচুড়ে একাকার। এছাড়া পুরো ভবনটিও মাটিতে কিছুটা দেবে গেছে। 

ভবনের সামনের সড়কে কাজ চলছে, সেখানেও গ্যাস ও ইলেকট্রনিক তার রয়েছে। সড়কের উপর লাব্বাইক ও আল মক্কা পরিবহনের দুটি বাসও ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ে থাকতে দেখা যায়। বাসগুলোর কাচ ভেঙে পড়েছিল। এগুলোর ভেতরে রক্তের দাগও দেখা যায়।

ডিএমপি কমিশনার এবং ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা যায়,বিস্ফোরণে শরমা হাউসের ভবনটির নিচতলার ভেতরেই দুর্ঘটনা ঘটেছে। ওই বিস্ফোরণে ঘটনাস্থল থেকে মোট ছয়জনকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে।

এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, ঘটনাস্থলের অদূরে একটি ভবনে নিচে তিন দাঁড়িয়ে ছিলেন। এ সময় বিশব্দ শুনতে পান। তিনি যে ভবনের নিচে ছিলেন, সেটির কিছু পলেস্তারা ধসে বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমারের ওপর পড়ে। এরপর ট্রান্সফরমার বিস্ফোরণে আগুন ধরে যায়। সেই আগুন উড়ালসড়কের ওপরে ও নিচে যাত্রীবাহী বাসে ছড়িয়ে পড়ে। এতে হতাহতের ঘটনা ঘটে।

এলাকাবাসী প্রায় প্রতিটি মানুষের ভাষ্য হলো, যে যে ভবনে কাজ করছিলেন বা বাস করছিলেন তারা মনে করেছেন, সেটিতেই বিস্ফোরণ ঘটেছে। এতে বিস্ফোরণের শব্দ এবং ভয়াবহতা সম্পর্কে আঁচ করা সম্ভব।  

মূল ক্ষতিগ্রস্ত ভবনটির রাস্তার ঠিক উল্টোদিকে আড়ং, পাশেই বিশাল সেন্টার। এই দুটো ভবনও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আড়ংয়ের আশেপাশের এবং লাগোয়া গলির ভেতরেও কয়েক ডজন বহুতল ভবনের রাস্তার পাশের সবকটি জানালার কাঁচ ভেঙে গেছে। তবে এসব জায়গা থেকে কোনও হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিসের একটি অ্যাম্বুলেন্সসহ ১৩টি ইউনিট কাজ করছে। ঘটনা তদন্তে একটি কমিটিও গঠন করা হয়।