অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

শতরঞ্জি পেল জিআই পণ্যের স্বীকৃতি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

প্রকাশিত: ১১:৫৯ পিএম, ১৭ জুন ২০২১ বৃহস্পতিবার   আপডেট: ১২:৪১ পিএম, ১৮ জুন ২০২১ শুক্রবার

শতরঞ্জিকে রংপুরের ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য হিসেবে সনদ দিল ডিপিডিটি

শতরঞ্জিকে রংপুরের ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য হিসেবে সনদ দিল ডিপিডিটি

জামদানির পর ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে রংপুরের শতরঞ্জি। ঐতিহ্যবাহী এই বুননশিল্পকে বৃহস্পতিবার (১৭ জুন) স্বীকৃতি দেয় শিল্প মন্ত্রণালয়ের পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেড মার্কস অধিদপ্তর (ডিপিডিটি)।

ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য হিসেবে রংপুরের শতরঞ্জিকে নিবন্ধনের জন্য ২০১৯ সালের ১১ জুলাই অধিদপ্তরটিতে আবেদন করেছিল বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক)।

আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২০ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশ ফর্মস অ্যান্ড পাবলিকেশন্স অফিসের জিআই জার্নাল নম্বর-০৭-এ শতরঞ্জি নিয়ে নিবন্ধ প্রকাশিত হয়। জার্নাল প্রকাশিত হওয়ার পর শতরঞ্জিকে রংপুরের ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য হিসেবে সনদ দিল ডিপিডিটি।

এর আগে ২০১৬ সালে দেশের প্রথম ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য হিসেবে জামদানিকে নিবন্ধিত করে বিসিক।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর অফিসার্স ক্লাবে ‘জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়নে মেধাসম্পদ’ শীর্ষক সেমিনার এবং বিশ্ব মেধাসম্পদ দিবস-২০২১ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ডিপিডিটি। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন।

অনুষ্ঠানে বিসিক চেয়ারম্যান মোশতাক হাসানের হাতে শতরঞ্জির জিআই স্বীকৃতির সনদ তুলে দেন শিল্পমন্ত্রী।

শতরঞ্জি হলো একধরনের কার্পেট। শব্দটি ফারসি শতরঞ্জ থেকে এসেছে। শতরঞ্জ হলো দাবা খেলার ছক। দাবার ছকের সঙ্গে নকশার মিল থেকে এসেছে নামটি।

শতরঞ্জি উত্তরের জেলা রংপুরের ঐতিহ্যবাহী বুননশিল্প। একসময় রাজা-বাদশাহদের কাছে এর কদর ছিল। মোগল সম্রাট আকবরের দরবারে শতরঞ্জি ব্যবহার করা হতো। জমিদারদের ভোজনের আসনেও ছিল এর ব্যবহার।

ঐতিহ্যবাহী পণ্যটি একসময় নদীপথে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে যেত। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে রংপুর থেকে এই বুননশিল্প প্রায় হারিয়ে গিয়েছিল। এখন আবার পুনরুজ্জীবিত হয়েছে এই শিল্প। রংপুরের উৎপাদিত শতরঞ্জি এখন আবার ইউরোপ, উত্তর আমেরিকাসহ বিভিন্ন মহাদেশ ও দেশে রপ্তানি হচ্ছে। 

নতুন করে এই হস্তশিল্পের প্রতি আগ্রহ বাড়ার পেছনে বিসিকের অবদান আছে। ১৯৭৬ সালে সরকারিভাবে শতরঞ্জি তৈরির একটি প্রকল্প নেয় এই প্রতিষ্ঠান। কিন্তু সেই উদ্যোগ খুব বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। তবে হাল ছেড়ে দেয়নি বিসিক।

ওই উদ্যোগের পর কিছু মানুষ এই শিল্পে যুক্ত হন। এরপর ১৯৯১ সালে ব্যক্তি উদ্যোগে শতরঞ্জির উৎপাদন শুরু হয়। এখন রংপুরজুড়েই শতরঞ্জি উৎপাদিত হচ্ছে। রপ্তানি হচ্ছে পৃথিবীর প্রায় ৪০টি দেশে।