অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

রোহিঙ্গারা আবারও ভাসানচর যাবে বর্ষা শেষে সেপ্টেম্বরে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

প্রকাশিত: ০৫:৩৬ পিএম, ১০ জুন ২০২১ বৃহস্পতিবার   আপডেট: ০৬:১১ পিএম, ১০ জুন ২০২১ বৃহস্পতিবার

ভাসানচরের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ১৮ হাজার ৪১৬ জন রোহিঙ্গা বসবাস করছেন

ভাসানচরের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ১৮ হাজার ৪১৬ জন রোহিঙ্গা বসবাস করছেন

সেপ্টেম্বরের শেষে ভাসানচরে রোহিঙ্গা স্থানান্তর প্রক্রিয়া শুরু হবে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ সচিব মো. মোহসীন। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে রোহিঙ্গা স্থানান্তরে নীতিমালা জমা দেবে ইউএনএইচসিআর’র নেতৃত্বে অন্যান্য সহযোগী সংস্থাগুলো।

বৃহস্পতিবার (১০ জুন) দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সচিব মো. মোহসীনের নেতৃত্বে বৈঠকে বসে ভাসানচরে রোহিঙ্গা স্থানান্তরে গঠিত কমিটির। সেখানে উপস্থিত ছিলেন ইউএনএইচসিআর, আইএমও, ডাব্লিউএফওসহ বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা।

বৈঠক শেষে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ সচিব। মো. মোহসীন বলেন, ‘আমরা একটা টাইম লাইন ঠিক করেছি। আগামী ১৭ তারিখের মধ্যে একটা পলিসি ডকুমেন্টেড ড্রাফট এদের পক্ষ থেকে দেবেন। এর মধ্যে আনুষ্ঠানিক বা অনানুষ্ঠনিকভাবে আমরা আলাপ-আলোচনা করব। কিছু বিষয় আছে। প্রয়োজন হলে আর এক-দুইটা মিটিং করব। আমরা আশা করছি, সেপ্টেম্বরের শেষের দিক থেকে আমরা আবার (রোহিঙ্গা) নেয়া শুরু করব।’

পলিসি ড্রাফট বা নীতিমালা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা এটা (রোহিঙ্গা ব্যবস্থাপনা) এই মুহূর্তে অপারেশন করছি কক্সবাজারে। যেহেতু ভাসানচর একটা ভিন্ন জায়গা, সেজন্য কিছু ইস্যু আছে। উনাদের কিছু জানার আছে, আমাদেরও কিছু বিষয় তাদের পরিষ্কার করার আছে। এজন্য আমরা সেখানে কীভাবে অপারেশন করব, কোন ক্ষেত্রে আমরা তাদের সহযোগিতা করতে পারি সেই এমন বিষয়ে পলিসি ডকুমেন্ট তৈরি করা হবে।’

কক্সবাজারে ১১ লাখ রোহিঙ্গার বাসস্থান গড়ে উঠায় নানা সংকটের তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘এজন্য সরকার ২ হাজার ৩০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ভাসানচরে জায়গা তৈরি করাছে। আমাদের উদ্দেশ্য হলো, এই মানুষগুলোকে মর্যাদার সঙ্গে তাদের দেশে ফেরত দেয়া। এজন্য জাতিসংঘ কাজ করছে। যেহেতু এটা একটা লম্বা প্রক্রিয়া।’

ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলেও জানান সচিব। তিনি বলেন, ‘সেখানে ২৩৫ পুলিশ ও এপিবিএন সদস্যরা কাজ করছে। অচিরেই ২০০ আনসার সেখানে পাঠানো হবে নিরাপত্তার কারণে।’

ইউএনএইচসিআর’র প্রতিনিধি জোহানেস ভ্যান ডার ক্লাউ বলেন, ‘সেখানে ১৮ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা আছেন। তাদের সাহায্য সহযোগিতার প্রয়োজন রয়েছে। কীভাবে আমরা কাজ শুরু করতে পারি, সে বিষয় নিয়ে আমরা আলাপ আলোচনা করেছি।’

ইউএনএইচসিআর’র পক্ষ থেকে শর্ত দেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি। বলেন, ‘আরও যে রোহিঙ্গা স্থানান্তরের কথা হচ্ছে, সেখানে আমরা বলেছি তাদের জানিয়ে তাদের মতামত নিয়ে ভাসানচরে নিতে হবে। তাদের ইচ্ছের বিরুদ্ধে সেখানে তাদের নেয়া যাবে না।’

বর্ষা মৌসুমটা প্রস্তুতির মধ্যে রাখতে চান জানিয়ে জাতিসংঘের এই প্রতিনিধি বলেন, ‘বর্ষা শেষ হলেই রোহিঙ্গাদের স্থানান্তর করা যেতে পারে।’

তাদের জীবন জীবিকার কথা ভেবে অর্থনৈতিক সংস্থান করা যায় কি না সেই বিষয়টিকেও গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরেছে ইউএনএইচসিআর।

ভাসানচরের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ১৮ হাজার ৪১৬ জন রোহিঙ্গা বসবাস করছেন। প্রথম দফায় কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে ৪ ডিসেম্বর ১ হাজার ৬৪২ জন রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে স্থানান্তর করা হয়।

এরপর ২৯ ডিসেম্বর ১ হাজার ৮০৫ জন এবং ২৮ ও ২৯ জানুয়ারি ৩ হাজার ২০০ জন রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে নেয়া হয়। ১৪ ফেব্রুয়ারি ২ হাজার ১৪ জন এবং ১৫ ফেব্রুয়ারি ৮৭৯ জন রোহিঙ্গা ভাসানচরে পৌঁছায়।