অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

৫০টি মডেল মসজিদ ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের উদ্বোধন

ধর্মের নামে জঙ্গিবাদ প্রতিহত করতে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

প্রকাশিত: ০১:০০ পিএম, ১০ জুন ২০২১ বৃহস্পতিবার   আপডেট: ০১:০৪ পিএম, ১০ জুন ২০২১ বৃহস্পতিবার

সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ নারীর প্রতি সহিংসতা থেকে মানুষ যেন দূরে থাকে

সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ নারীর প্রতি সহিংসতা থেকে মানুষ যেন দূরে থাকে

জঙ্গিবাদে জড়িতদের বিপথ থেকে ফিরে আসার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পরিবার বা কোনোকিছু ধ্বংস করে বেহেশতে যাওয়া যাবে না। জঙ্গিবাদ ইসলাম ধর্মকে নষ্ট করছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় ৫০টি মডেল মসজিদ ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

বৃহস্পতিবার (১০ জুন) গণভবন থেকে অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ‘বিশ্বের কোথাও জঙ্গিবাদ হলেই ইসলামিস্ট নাম দেয়া। আমি যখনই কোনো অনুষ্ঠানে কাউকে এ রকম বলতে শুনেছি, সবসময়ই এটার প্রতিবাদ করেছি। মুষ্টিমেয় মানুষের জন্য একটি ধর্মকে অপরাধী করা যায় না। যারা এর সাথে জড়িত, আশা করি তারা এ পথ সর্বনাশের পথ থেকে বেরিয়ে আসবে।’

ধর্মের নামে জঙ্গিবাদ প্রতিহত করতে আলেম-ওলামা, ধর্মপ্রাণ মুসলমান ও অভিভাবকদের এগিয়ে আসার অনুরোধ জানান প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘ধর্মের নামে কীভাবে জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করা হয়েছে। শুধু আমাদের দেশেই না, সারা বিশ্বেই দেখেছি। আমার প্রশ্ন যারা এতদিন ধরে মানুষ খুন করেছেন তারা কে কে বেহেশতে গেছেন? এরাই সবচেয়ে সর্বনাশ করে গেছে ইসলাম ধর্মের। মুষ্টিমেয় কিছু লোক মানুষ মেরে, বোমা মেরে, খুন করে আমাদের পবিত্র ধর্মকে নষ্ট করেছে।’

মসজিদ নির্মাণ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সারা দেশে মসজিদ করার সিদ্ধান্ত এটা আমাদের বহু আগেই ছিল। আমাদের প্রচেষ্টাও ছিল। এটা আমরা আমাদের নির্বাচনি ইশতেহারেও দিয়েছিলাম। এই মসজিদের সাথে সাথে আমাদের ইসলাম, সংস্কৃতি, ধর্মীয় শিক্ষা, দীনি-দাওয়াতি কার্যক্রম, এগুলোর প্রচার-প্রসার যেন সৃষ্টি করা যায়।

সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ নারীর প্রতি সহিংসতা থেকে মানুষ যেন দূরে থাকে। ইসলামের মূল প্রতিপাদ্য, মূল কথাটা যাতে মানুষ শিখতে পারে।’

সরকারের পরিকল্পনা-
প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় একটি করে মোট ৫৬০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপনের একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন।

মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রগুলোর প্রতিটি ৪৩ শতাংশ জায়গার ওপর তিন ক্যাটাগরিতে নির্মাণ করা হচ্ছে।

‘এ’ ক্যাটাগরিতে ৬৪টি জেলা ও কয়েকটি সিটি করপোরেশনে ৬৯টি, ‘বি’ ক্যাটাগরিতে উপজেলা পর্যায়ে ৪৭৫টি এবং ‘সি’ ক্যাটাগরিতে উপকূলীয় এলাকায় ১৬টি মডেল মসজিদ ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণ করার কথা রয়েছে।

মসজিদগুলোতে নারী ও পুরুষদের জন্য আলাদা অজু ও নামাজকক্ষ, ইমাম প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, হেফজখানা, গণশিক্ষাকেন্দ্র, গবেষণাকেন্দ্র, পাঠাগার, মৃতদেহ গোসলের ব্যবস্থা, জানাজার ব্যবস্থা, হজযাত্রীদের নিবন্ধন, অটিজম কর্নার, ই-কর্নার ও বিদেশি পর্যটকদের আবাসনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

২০১৪ সালের নির্বাচনি ইশতেহারে ইসলামি মূল্যবোধের উন্নয়ন এবং ইসলামি সংস্কৃতি বিকাশে প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় একটি করে মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

২০১৫ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি ধর্ম মন্ত্রণালয় পরিদর্শনে এসে দেশের প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় একটি করে ৫৬০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপনের নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০১৮ সালে একনেক সভায় প্রকল্পটি অনুমোদন দেয়া হয়। সরকারি অর্থায়নের এই প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় ৮ হাজার ৭২২ কোটি টাকা।