অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

রহনপুর

বাজার করে, আড্ডা দিয়ে এসে জানলেন তিনি করোনা পজিটিভ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, চাঁপাইনবাবগঞ্জ

প্রকাশিত: ১২:২৯ পিএম, ১০ জুন ২০২১ বৃহস্পতিবার  

বাশার (ছদ্মনাম) পেশায় ব্যবসায়ী। বয়স ৩৫। গোমস্তাপুর উপজেলার রহনপুরের বাসিন্দা। বেশ কিছুদিন ধরে শরীরে জ্বর আর শ্বাসকষ্ট অনুভব করায় গত ৫ মে চাঁপাইনবাবগঞ্জের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, রহনপুরে করোনার এন্টিজেন্ট পরীক্ষা করান। সেখান থেকে ৫ মে তাকে ব্যবস্থপত্র দেয়া হয়, এন্টিজেন্ট পরীক্ষায় তার রেজাল্ট আসে নেগেটিভ।

স্বস্তি পেয়ে বাশার পরের দিন বাজারে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে যান। বিকাল ৫ টা পর্যন্ত ব্যবসা করেন। বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে আড্ডা দেন। মসজিদে গিয়ে নামাজ পরেন। কাঁচাবাজারে গিয়ে বাজার করেন। গত কয়েকদিন নিয়মিতই এসব করেছেন তিনি। 

বিপত্তি বাঁধে গত ৮ মে থেকে। তার বাড়িতে রহনপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে প্রতিনিধি পাঠানো হয়। সেসময় বাশার বাইরে ছিলেন বন্ধুদের সঙ্গে। বাড়িতে তার স্ত্রীকে বাশারের করোনার পজিটিভের কথা জানানো হয়। জানানো হয়, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে বাশারের নমুনা রিয়াল টাইম পলিমারেস চেইন রিঅ্যাকশন ( পিসিআর) পরীক্ষা করে করোনা পজিটিভ রেজাল্ট পাওয়া গেছে। বাশারকে বাড়িতে থাকার ও চিকিৎসার পরামর্শ দেন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মীরা। বাশার সেদিন থেকে বাড়িতে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। 

চাঁপাইনবাবগঞ্জে গোমস্তাপুরে করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ। ১৪ দিনের কঠোর লকডাউনও শেষ হয়েছে মাত্র কয়েকদিন আগে। এখনো কিছু শর্তে লোকডাউন চলছে। এরকম ভয়ংকর পরিস্থিতিতে করোনা রোগীর এমন উদাসীন ও অপেশাদার আচরন রহনপুরবাসীকে শংকায় ফেলেছে। এন্টিজেন্ট টেস্ট করিয়ে নেগেটিভ রেজাল্ট নিয়ে অনেকেই স্বাভাবিক জীবনযাপন করছেন। কিন্তু পরে দেখা যাচ্ছে তাদের কারো কারো পিসিআর টেস্টের রেজাল্ট পজিটিভ আসছে।

করোনা আক্রান্ত বাশার অপরাজেয় বাংলাকে জানান, তার শরীর খারাপ থাকায় গত ৫ মে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এন্টিজেন্ট টেস্ট করান। রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছিল। তাই তিনি বাইরে ছিলেন। তিনি জানতেননা পরে আবার রেজাল্ট পজিটিভ আসতে পারে। এসব বিষয়ে তার কোন ধারণা নেই। তাকে কেউ ধারণাও দেইনি। ৮ মে তিনি জানতে পারেন তার আসলে করোনা পজিটিভ। সেদিন রাত থেকেই তিনি বাড়িতে আছেন। সবকিছু মেনে চলছেন। 

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. মো. হাসান আলী এ বিষয়ে জানান, র্যাপিড এন্টিজেন্ট টেস্ট করে তার রেজাল্ট নেগেটিভ আসে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শুধুমাত্র এন্টিজেন্ট পরীক্ষা করা হয়। এন্টেজেন্ট টেস্টে নেগেটিভ আসলেও পরে পিসিআর টেস্টে যে পজিটিভ আসবেনা এমন কোন নিশ্চয়তা নেই।করোনার ক্ষেত্রে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য টেস্টটির নামই আরটি পিসিআর টেস্ট। বাশারের বেলাতেও এমন হয়েছে। তার এন্টিজেন্ট নেগিটিভ কিন্তু পিসিআর টেস্টে পজিটিভ এসেছে। তাই তাকে বাড়িতে বিধি নিষেধ মেনে থাকতে বলা হয়েছে। 

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ( ইউএচও) মাসুদ পারভেজ জানান, করোনার উপসর্গ থাকলেই রোগীকে বিধি নিষেধ মেনে চলার কঠোর নির্দেশনা আছে। মূল রেজাল্ট না আসা পর্যন্ত সবাইকে নিয়ম মেনে চলতে হবে।