অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

বিশ্বের সবচেয়ে বড় স্টিং অপারেশনে কয়কশ` অপরাধী গ্রেফতার

ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক

প্রকাশিত: ০২:০১ পিএম, ৮ জুন ২০২১ মঙ্গলবার   আপডেট: ০২:৪১ পিএম, ৮ জুন ২০২১ মঙ্গলবার

অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে বড় স্টিং অপারেশনের তথ্য দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন (বাঁয়ে)।

অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে বড় স্টিং অপারেশনের তথ্য দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন (বাঁয়ে)।

যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই) পরিচালিত এক সুরক্ষিত অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে করে তিন বছরের স্টিং অপারেশনে কয়েকশ’ অপরাধীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৮ জুন) বিবিসির প্রতিবেদনে বিষয়টি উঠে আসে। 

২০১৮ সালে অত্যন্ত গোপনীয়তার মাধ্যমে ‘অ্যানম’ নামক অ্যাপটি অপরাধীদের মাঝে ছড়িয়ে দেয় এফবিআই ও অস্ট্রেলিয়ান পুলিশ, যাতে তাদের অজান্তেই সব কথোপকথনের উপর নজর রাখা যায়। 

মোট ১৮ টি দেশ থেকে এসব অপরাধীদের গ্রেফতার করা হয়েছে যেখানে মাফিয়া এবং সংঘবদ্ধ অপরাধ গোষ্ঠীর সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযুক্তরাও আছেন। তাদের সাথে সাথে মাদক, অস্ত্র ও নগদ অর্থ জব্দ করা হয়েছে। 

অস্ট্রেলিয়ার পক্ষ থেকে বলা হয়, তারা ২২৪ জন এমন অপরাধীকে গ্রেফতার করেছে যারা আগামী দিনে ২০টি বড় হত্যাযজ্ঞের পরিকল্পনা করছিল। যেখানে অসংখ্য নিরীহ মানুষের জীবননাশের হুমকি ছিল।  

অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন এক প্রেস কনফারেন্সে এটাকে ‘ওয়াটারশেড স্টিং অপারেশন’ আখ্যা দিয়ে বলেছেন, বিশ্বজুড়ে সংঘবদ্ধ অপরাধ দলকে এটা আঘাত করেছে। শুধু অস্ট্রেলিয়া নয়, এই অপারেশন পুরো বিশ্বের সংঘবদ্ধ অপরাধ কমিয়ে আনবে। 

মঙ্গলবার (৮ জুন) নিউজিল্যান্ড জানায়, তারা ৩৫ জনকে আটক করেছে। অপারেশনটিকে দেশটিকে সংঘবদ্ধ অপরাধের বিরুদ্ধে বিশ্বের সবচেয়ে বড় আইনী পদক্ষেপ হিসেবে অভিহিত করেছে। 

এ বিষয়ে এফবিআই ও ইউরোপোল আরও বিশদ উপস্থাপনা করবে মঙ্গলবার (৮ জুন।  

কীভাবে কাজ করেছে অ্যানোম 

নিউজিল্যান্ড পুলিশ জানায়, এফবিআই প্রথনে নিজস্ব এনক্রিপটেড অ্যাপ অ্যানম তৈরি করে। পরে অস্ট্রেলয়ান এল আন্ডারকাভার পুলিশ তা দেয়টির সবচেয়ে বড় মাদক ব্যবসায়ীর হাতে দেয়৷ প্রথমে সিনিয়র মাফিয়ার সদস্যরা সেটি বিশ্বাস করে অন্যদের ব্যবহার করতে বলে। 

তারপরই অপরাধীদের মিলিয়ন মিলিয়ন ম্যাসেজ সাথে সাথেই পড়তে সক্ষম হয় গোয়েন্দারা। তাদের মাদক চালান ও বড় স্ক্যামগুলো প্রকাশ পায়৷ 

অস্ট্রেলিয়ান ফেডারেল পুলিশের কমিশনার রিস কারশো বলেন, অপরাধীরা এই অ্যাপের মাধ্যমে নিজেদের মধ্যে মাদক, সংঘর্ষ, কে কাকে মারবে এবং কোথায় কোন ব্যক্তিকে হত্যা করে হবে সব আলোচনা করতো।

এখন পর্যন্ত কী পাওয়া গেছে? 

কমিশনার রিস কারশো বলেন, যে ২২৪ জনকে আটক করা হয়েছে তারা মোটরসাইকেল গ্যাং, মাফিয়া গ্রুপ, এশিয়ান অপরাধচক্র ও অন্যান্য সংঘবদ্ধ চক্রের সদস্য। তাদের কাছ থেকে তিন টন মাদক ও ২৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার নগদ উদ্ধার করা হয়। 

এই অপারেশনের নাম অস্ট্রেলিয়া দিয়েছিল ‘অপারেশন আয়রনসাইড’। যেখানে প্রায় ৪ হাজার পুলিশ তিন বছর ধরে কাজ করেছে। আর বিশ্বজুড়ে কাজ করেছে আরও ৯ হাজার পুলিশ। 

কারশো জানান. তাদের যোগাযোগ মাধ্যম হ্যাক করাটাই ছিল এই সফল অপারেশনের মূলমন্ত্র। তিনি বলেন, এমন নজির আগে কখনও ছিল না। খুব কৌশলে ম্যাসেজিং অ্যাপ অ্যানোমটি অপরাধীদের মধ্যে জনপ্রিয় করা হয়। 

নিউজিল্যান্ড পুলিশ জানায়, গ্রেফতার হওয়া ৩৫ জনের বিরুদ্ধে ৯০০ এর বেশি অভিযোগ ছিল। তাদের কাছে থেকে ২.৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার উদ্ধার করা হয়। 

নিউজিল্যান্ডের ন্যাশনাল সংঘবদ্ধ অপরাধ প্রতিরোধ গ্রুপের পরিচালক ও গোয়েন্দা পুলিশ সুপার গ্রেগ উইলিয়ামস বলেন, আমরা আশা করছি এই অপারেশনের মাধ্যমে দেশে সংঘবদ্ধ অপরাধের ঘটনা অনেকটাই কমে আসবে।