অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

নিউইয়র্ক টাইমসের চার রিপোর্টারের সোর্স জানতে সরকারের গোপণ চেষ্টা

পৃথিবীজুড়ে ডেস্ক

প্রকাশিত: ১০:০৮ এএম, ৫ জুন ২০২১ শনিবার   আপডেট: ১১:৪০ এএম, ৫ জুন ২০২১ শনিবার

নিউ ইয়র্ক টাইমস

নিউ ইয়র্ক টাইমস

বিষয়টি শুরু হয় ট্রাম্প প্রশাসনের শেষ সপ্তায়, তবে বাইডেন প্রশাসন এসেও বিষয়টি টেনে নিয়ে যায়। এই সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ এক গোপণ আইনি লড়াই চালিয়ে যাচ্ছিলো- যার লক্ষ্য ছিলো নিউ ইয়র্ক টাইমের চার রিপোর্টারের ই-মেইল চালাচালির পূর্ণ তথ্য হাতে পাওয়া। কারণ একটাই, তাদের দেওয়া খবরগুলোর সোর্স কারা ছিলো তা জানা। 

নিউ ইয়র্ক টাইমসের আইনজীবী ডেভিড ম্যাকক্রো এই ঘটনাকে নজিরবিহীন বলে উল্লেখ করে জানিয়েছেন, এমন একটি কাণ্ড হচ্ছে তা ট্রাম্প প্রশাসন টাইমস কর্তৃপক্ষের কাছে পুরোপুরি চেপে গেছে। বাইডেন প্রশাসন এসে টাইমসের কয়েকজন এক্সিকিউটিভকে বিষয়টি জানালেও তা যেনো প্রকাশ্যে জানাজানি না হয় সে জন্য এক বিশেষ আদেশ চাপিয়ে দেয়। 

ওই আদেশে টাইমসের নির্বাহী সম্পাদক ডিন বাকেটসহ বার্তাকক্ষের অন্য উর্ধ্বতনদের কাছেও বিষয়টি গোপণ রাখার জন্য বলা হয় এক্সিকিউটিভদের। 

আইনজীবী ডেভিড ম্যাকক্রো স্থানীয় সময় শুক্রবার রাতে জানান, ওই দিনই যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল কোর্ট গত ৩ মার্চ জারি করা বিশেষ আদেশটি তুলে নেন। এ কারণেই তার পক্ষে খবরটি জানানো সম্ভব হচ্ছে। 

জাস্টিস ডিপার্টমেন্ট গুগলের কাছ থেকে ওই রিপোর্টারদের ই-মেইল লগ বের করে নেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলো। নিউইয়র্ক টাইমসের ই-মেইল সিস্টেম গুগলের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। তবে গুগল কারো ই-মেইলের তথ্য প্রকাশ না করা কিংবা সংরক্ষণ করার বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। 

জাস্টিস ডিপার্টমেন্ট মাত্র দুই দিন আগে নিউইয়র্ক টাইমসের ওই চার রিপোর্টারকে জানায় যে, ট্রাম্প প্রশাসন তাদের সোর্সগুলো খুঁজে বের করার লক্ষ্যে ২০২০ সালে গোপণে তাদের ফোনালাপগুলো সংগ্রহ করে নেয়। সে সময়ে ২০১৭ সালের গোড়ার দিক থেকে তাদের করা ফোনালাপের রেকর্ড ট্রাম্প প্রশাসনের হস্তগত হয়। একই ধরনের ঘটনা ঘটে ওয়াশিংটন পোস্ট ও সিএনএন'র কয়েকজন প্রতিবেদকের ক্ষেত্রেও। 

নিউইয়র্ক টাইমসের নির্বাহী সম্পাদক ডিন বাকেট এই ঘটনায় ট্রাম্প ও বাইডেন উভয় প্রশাসনে এহেন আচরণে তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। এবং বলেছেন, তাদের এই উদ্যোগ রাষ্ট্রের সংবিধানের প্রথম সংশোধনীর সুস্পষ্ট অবমাননা। 

তথ্য না দিয়ে গুগল একদম ঠিক কাজটিই করেছে, তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে এমন একটি প্রচেষ্টা চালানো একেবারেই উচিত হয় নি, বলেন মি. বাকেট। 

"ট্রাম্প প্রশাসনের শেষ ১৫ দিনে জাস্টিস ডিপার্টমেন্ট রিপোর্টারদের খবরের সোর্স বের করতে মরিয়া হয়ে ছিলো। আর বাইডেন প্রশাসন এসে সে প্রচেষ্টা অব্যহত রেখেছে। আমি বলছি, এতে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা চরমভাবে হেয় প্রতিপন্ন হয়েছে।" 

আইনজীবী ডেভিড ম্যাক্রো বলেন, নিউইয়র্ক টাইমসে বিরুদ্ধে তদন্ত করা হবে কয়েকজন জুনিয়র এক্সিকিউটিভকে জানিয়ে। উর্ধ্বতনদের যাতে তা জানানো না হয় সে জন্য বিশেষ আদেশ জারি করবে জাস্টিস ডিপার্টমেন্ট, এমন নজির অতীতে কখনোই ছিলো না। তিনি আরও বলেন, না জানিয়ে টাইমসের ফোন রেকর্ড হাতিয়ে নেওয়ার মত ঘটনাও অতীতে কখনোই ঘটেনি।