অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

শ্রীলঙ্কাকে হোয়াইটওয়াশ করা হলো না টাইগারদের

স্পোর্টস ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৯:০২ পিএম, ২৮ মে ২০২১ শুক্রবার   আপডেট: ০৯:০৩ পিএম, ২৮ মে ২০২১ শুক্রবার

বাংলাদেশের কাছে ওয়ানডে সিরিজ মেনেই নিতে পারেননি সাবেক শ্রীলঙ্কান ক্রিকেটার ও বর্তমান সংসদ সদস্য সনাথ জয়সুরিয়া। শেষ ওয়ানডেতে ঘুরে দাঁড়ানোর বার্তা দিয়েছিলেন কুশাল পেরেরাদের কাছে। তার উৎসাহেই হয়তো শেষ ম্যাচে স্বাগতিকদের ৯৭ রানের বিশাল ব্যবধানে হারিয়েছে শ্রীলঙ্কা। 

প্রথম দুই ম্যাচে বাংলাদেশেকে ভুগিয়েছে ব্যাটিং। মুশফিক ও মাহমুদুল্লাহর দুই জুটি ও বোলারদের সাফল্যে প্রথমবার শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজ নিশ্চিত করে টাইগাররা। আজ মুশফিক ভালো করতে পারেননি। সাথে যোগ হয় ফিল্ডিংয়ে ক্যাচ ছাড়ার ‘অনুশীলন’। সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে লঙ্কান ব্যাটিংয়ের নায়ক কুশাল পেরেরাকে একরকম উপহার দিয়েছেন মোস্তাফিজ-মাহমুদুল্লাহ। ব্যাটিং আর ফিল্ডিংয়ের জোড়া ব্যর্থতায় আর ম্যাচে ফিরতে পারেনি বাংলাদেশ। 

মিরপুরের মাঠ হিসেবে ২৮৭ রান বড় লক্ষ্য। ওভারপ্রতি প্রায় ছয় রান করে প্রয়োজন এমন অবস্থায় ব্যাট করতে নেমে ২৮ রানে তিন উইকেট হারায় বাংলাদেশ। সবকটি উইকেট নেন পুরো সিরিজে দুর্দান্ত বল করা দুস্মান চারিমা্। অন্যদিকে প্রথম দুই ম্যাচে ব্যাটিংয়ে ব্যর্থ সাকিব আজও ফিরেছেন চার রানে আর লিটনের পরিবর্তে একাদশে আসা নাইম করেন এক রান। 

চতুর্থ উইকেট জুটিতে মুশফিক-মোসাদ্দেক মিলে চেষ্টা করলেও রামেশ মেন্ডিসের ঘূর্ণিতে ফেরেন মি. ডিপেন্ডেবল। মাথার উপর তখন রানে পাহাড়। এমন অবস্থায় নিজের দ্বিতীয় ওয়ানডে ফিফটি আদায় করেন মোসাদ্দেক। তবে বেশিদূর এগোতে পারেননি। রামেশ মেন্ডিসের বলেই ক্যাচ হন বিনুরা ফার্নান্দোর। 

আফিফ হোসেনকে নিয়ে ফিফটি করেন মাহমুদুল্লাহও। ফার্নান্দোর বলে এই মিডলঅর্ডার সাজঘরে ফেরার পরই তাসের ঘরের মতো ধসে পড়ে টাইগারদের লেজের ব্যাটিং। ১৮৯ রানেই অলাআউট হয় দল। 

এর আগে শেষ ম্যাচে প্রথমবার টসে জিতে শ্রীলঙ্কা। সিদ্ধান্ত নেয় ব্যাটিংয়ের। আর পিচে থেকে সুবিধা আদায় করে নিতে প্রথম থেকেই দ্রুত রান তুলতে থাকে সফরকারীরা। 

শরিফুলের করা প্রথম ওভারেই আসে ৯ রান। পরের ওভারে মিরাজ দুই রান দিলে তৃতীয় ওভার থেকে প্রতি ওভারে আসতে থাকে বাউন্ডারি। দুই বাঁহাতিকে আটকাতে দুই অফস্পিনার এনেও লাভ হয়নি। পাওয়ার প্লেতে আসে ৭৭ রান। 

দ্বাদশ ওভারে এসে দলকে স্বস্তিতে ফেরান তাসকিন। দ্বিতীয় বলটি স্লগ ওভারের মতো বাউন্ডারি হাঁকাতে যান গুনাথিলাকা। কিন্তু বল গিয়ে স্ট্যাম্প ভেঙে দেয়। সে ওভারের শেষ বলেই গুড লেন্থের বলে পাথুম নিশাঙ্কাকে মুশফিকুর রহমানের ক্যাচ বানান এই পেসার। যা তাসকিনের ৫০তম ওয়ানডে উইকেট। যার জন্য ৩৯ ম্যাচ খেলতে হয়েছে তাকে। 

তৃতীয় উইকেট জুটিতে আবারও এগিয়ে যেতে থাকে শ্রীলংকা। তারজন্য অবশ্য দায়ী বাংলাদেশী ফিল্ডাররা। সাকিবের দুই ওভারে ক্যাচ উঠিয়েও  ‘জীবন’ পান লঙ্কান অধিনায়ক কুশাল পেরেরা। ২৩ ওভারে সাকিবকে সুইপ করতে গিয়ে বল হাওয়ায় ভাসান পেরেরা কিন্তু মুঠোবন্দি করতে পারেননি মোস্তাফিজুর। আর ২৫ ওভারে আবারও আসে সুযোগ। এবার সেটি হারান তাসকিন আহমেদ। ফলে ব্যক্তিগত  ৬৮ রানের পর ৭৯  রানে দ্বিতীয় জীবন পান তিনি। 

পরে সে তাসকিনই বাংলাদেশকে উপহার দেন তৃতীয় উইকেট। ২৬ তম ওভারেই মিড অফে দাঁড়ানো তামিম ইকবালের হাতে ক্যাচ দেন কুশাল মেন্ডিস। ২২ রানে থামে লঙ্কান সহ-অধিনায়কের ইনিংস। 

তবে ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়া পেরেরাকে সহজে থামানো যায়নি। ৯৯ রানে আবারও ক্যাচ দেয়ার পর ৯৮ বলে আদায় করে নিয়েছেন নিজের ষষ্ঠ ওয়ানডে সেঞ্চুরি। যাকে দলীয় ২১৬ রানে থামান শরিফুল। এবার আর ভুল করেননি মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। শরিফুলের ব্যাক অব দ্য লেন্থ বলটি মিড অফে ঠেলে দিতে চেয়েছিলেন পেরেরা। তবে চমৎকার এক ক্যাচে শেষ হয় তার ১২০ রানের ইনিংস। 

২৩১ রানে রানআউট হয়ে ফিরে যান নিরোশান ডিকভেলা। শেষদিকে ওয়াহিন্দু হাসারাঙ্গা ও রামেশ মেন্ডিসকে নিয়ে ২৮৬ রানের সংগ্রহ আনেন ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা। শেষ পর্যন্ত এই ব্যাটসম্যান অপরাজিত ছিলেন ৫৫ রানে। আর হাসারাঙ্কাকে সাজঘরে পাঠিয়ে নিজের চতুর্থ উইকেট আদায় করেন তাসকিন। 

স্কোরকার্ড: 

শ্রীলঙ্কা ২৮৬-৬। কুশাল পেরেরা ১২০, ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা ৫৫*, গুনাথিলাকা ৩৯। তাসকিন ৪৬-৪, শরিফুল ৫৬-১।

বাংলাদেশ ১৮৯। মাহমুদুল্লাহ ৫৩, মোসাদ্দেক ৫১, মুশফিক ২৮। দুষ্মান্ত চামিরা ১৬-৫, রামেশ মেন্ডিস ৪০-২, ওয়াহিন্দু হাসারাঙ্গা ৪৭-২। 

ফলাফল: শ্রীলংকা ৯৭ রানে জয়ী

ম্যান অব দ্য ম্যাচ- দুস্মান্ত চামিরা

প্লেয়াল অব দ্য সিরিজ- মুশফিকুর রহিম