সহিংসতা ও প্রাণহানীর জন্য সরকারকে দায়ী করলেন ফখরুল
সহিংসতা ও প্রাণহানীর জন্য সরকারকে দায়ী করলেন ফখরুল
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে হেফাজতে ইসলামের নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষে নিহতদের ‘সাধারণ’ মানুষ মন্তব্য করে তাদের প্রাণহানীর জন্য সরকারকে দায়ী করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সংঘর্ষে নিহতের প্রতিবাদে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সোমবার (২৯ মার্চ) ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে এ মন্তব্য করেন তিনি।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে দুই দিনের সফরে ২৬ মার্চ ঢাকায় আসেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তার প্রতিবাদে শুক্রবার জুমার নামাজের পর বায়তুল মোকাররম মসজিদে হেফাজতে ইসলামের নেতা-কর্মীরা পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ান।
পরে সেই সংঘর্ষের প্রতিবাদে চট্টগ্রামের হাটহাজারী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সংঘর্ষে জড়ায় নেতা-কর্মীরা। সে দিন চট্টগ্রামে চারজন ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একজন নিহত হন। পরেরদিন সংঘর্ষে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পাঁচজন নিহত হন। আর রোববার নিহত হন তিনজন। তার প্রতিবাদেই বিএনপি এই বিক্ষোভ কর্মসূচি দেয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সরকার স্বাধীনতা দিবসে বাংলাদেশের মাটিতে সাধারণ মানুষের রক্ত ঝরিয়েছে। গত তিন দিনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ঢাকা ও চট্টগ্রামে সাধারণ মানুষের যে প্রাণ গেল এর জন্য সম্পূর্ণভাবে দায়ী সরকার, এ জন্য জনগণের কাছে জবাব দিতে হবে। এই রক্তের ঋণ শোধ করতে হবে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সরকার পরিকল্পিতভাবে একদলীয় শাসনব্যবস্থা বাকশাল প্রতিষ্ঠিত করেছে। আমরা কয়েকদিন ধরে লক্ষ করেছি, এই সরকার তার পেটুয়াবাহিনীসহ আওয়ামী লীগ দিয়ে নিরীহ মানুষদের উপর অত্যাচার করেছে, হত্যা করেছে, গ্রেপ্তার করেছে।
‘আমাদের দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য নিপুন রায়সহ ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবকদলের অনেক নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এভাবে কখনও একটি দেশ চলতে পারে না।’
ফখরুল বলেন, ‘পরিকল্পিতভাবে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা হরণ করা হয়েছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে পেটুয়াবাহিনীতে পরিণত করেছে। স্বাধীনতার ৫০ বছর পর জনগণের আশা আকাঙ্খাকে পদদলিত করে আওয়ামী লীগ সরকার টিকে থাকতে পারবে না। তাদেরকে অবশ্যই চলে যেতে হবে৷’
সবাইকে ঐক্যবদ্ধের আহ্বান জানিয়ে বিএনপির নেতা বলেন, ‘আসুন এই সরকারকে সরিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করি। আওয়ামী লীগকে বলতে চাই, আপনারা অবিলম্বে পদত্যাগ করুন, নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন। অন্যথায় প্রতিটি বিকৃত সরকারকে যেভাবে পদত্যাগ নিতে হয়েছে, আপনাদেরও একইভাবে বিদায় নিতে হবে।’
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরকে কেন্দ্র করে সরকারের সমালোচনা করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ।
তিনি বলেন, ‘আজ আমাদের সরকার ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক করেছে, অত্যন্ত ঘনিষ্ঠপূর্ণ সম্পর্ক। ভালো কথা। আমরাও চাই প্রতিবেশীদের সঙ্গে সম্পর্ক সুন্দর হোক, সুষ্ঠু হোক।
‘কিন্তু এখন পর্যন্ত তিস্তার পানি চুক্তি হয়নি, সীমান্তে হত্যাকাণ্ড বন্ধ হয়নি। আমার জানা নেই যে, একটা সভ্য দেশে শুধু বর্ডার ক্রস করার জন্য গুলি করে হত্যা করা হয়। এর জন্য বিচার ব্যবস্থা থাকতে পারে, কিন্তু গুলি করে হত্যার বিধান আছে বলে আমার জানা নেই।’
ফখরুল বলেন, ‘তাদের (ভারতের) সঙ্গে আমাদের যে ব্যবসা-বাণিজ্য আছে সেই ব্যবসার কোনো সমাধান আমরা এখন পর্যন্ত পাইনি। এই সরকার এতোটাই নতজানু যে, সরকার ভারত বা অন্যান্য দেশ থেকে আমাদের ন্যায্য দাবিগুলো কোনোভাবে আদায় করতে পারছে না।
‘এই সরকারকে রেখে জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা, স্বাধীনতা রক্ষা হবে না। খালেদা জিয়াকে এই সরকারের চক্রান্ত করে তিন বছর ধরে আটকে রেখেছে। তাকে অবশ্যই আমাদের মুক্ত করতে হবে। তারেক জিয়া নির্বাসিত আছেন, তাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে।’
সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানী, সহসাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, সহজলবায়ু বিষয়ক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, ঢাকা উত্তর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মুন্সী বজলুল বাসিত আঞ্জুসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন
জনপ্রিয়
- ঋণখেলাপীর মিথ্যা মামলায় ডিএমডিকে হয়রানি, এবি ব্যাংকের প্রতিবাদ
- পাইলট ক্যাপ্টেন নওশাদ কাইয়ুম ক্লিনিক্যালি ডেড, লাইফসাপোর্ট খোলার সিদ্ধান্ত
- সরকার ই-কমার্স ফ্রেন্ডলি, এখনই ২০০০ কোটি টাকার মার্কেট এক্সপ্লোর করা সম্ভব
- জাতিসংঘ ৭৭-তম অধিবেশনে যোগ দিচ্ছেন শেখ হাসিনা, কি থাকছে?
- আরজে কিবরিয়ার অনুষ্ঠানে এসে ২৫ বছর পর বাবা-মাকে খুঁজে পেলেন মেয়ে
- বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৩তম জন্মদিন আজ
- ঢাকায় বসবে ২৫৮কি.মি. পাতাল রেল, কোথা থেকে কোথায়?
- করোনা পরীক্ষায় প্রতারণাকে নির্মম বাণিজ্য বললেন ওবায়দুল কাদের
- মেট্রোরেলের আদ্যোপান্ত, ডেডলাইন জয়ে ছুটছে কর্তৃপক্ষ
- বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস
`বঙ্গবন্ধু ফিরে এলে তোমার স্বপ্নের স্বাধীন বাংলায়`