বৃহস্পতিবার   ২৮ মার্চ ২০২৪ || ১৪ চৈত্র ১৪৩০ || ১৬ রমজান ১৪৪৫

অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

তৃণমূল কর্মীরাই ধরে রেখেছে আওয়ামী লীগকে: প্রধানমন্ত্রী

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

১৮:৫৪, ৪ জুলাই ২০২২

আপডেট: ১৮:৫৭, ৪ জুলাই ২০২২

৩০৩

তৃণমূল কর্মীরাই ধরে রেখেছে আওয়ামী লীগকে: প্রধানমন্ত্রী

তৃণমূলের কর্মীরাই আওয়ামী লীগকে ধরে রেখেছে বলে জানিয়েছেন দলটির সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘শত নির্যাতনের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ সংগঠন কিন্তু সব সময় শক্তিশালী। আওয়ামী লীগ বিশেষ করে আমাদের মাঠকর্মীরা সবসময় সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়। তারা কিন্তু পার্টিটাকে ধরে রাখছে। এই কথাটি আমাদের মনে রাখতে হবে।’

সোমবার (৪ জুলাই) একদিনের টুঙ্গিপাড়া সফরকালে দুপুরে টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী তার নির্বাচনি এলাকা কোটালীপাড়া ও টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময়েকালে এসব কথা বলেন।

তৃণমূলের কর্মীদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমার বাবা-মা’র দোয়া আছে, উপরে আল্লাহ আছেন। আর আমার সব থেকে বড় শক্তি কিন্তু আপনারাই। প্রত্যেকটি কাজ আমরা পরিকল্পিতভাবে করে যাচ্ছি বলে আজকে বাংলাদেশের মানুষ ভালো আছে।’

সফলভাবে করোনা মোকাবিলা প্রসঙ্গ টেনে সরকারপ্রধান বলেন, ‘এই করোনার সময় উন্নত দেশ, যাদের অনেক টাকা— কই তারা তো কেউ বিনা পয়সায় ভ্যাকসিন দেয়নি। কিন্তু আমরা দিতে পেরেছি। সবাই মিলে একযোগে কাজ করতে পেরেছি বলে আজকে করোনা মোকাবিলা, বন্যা মোকাবিলা— যেকোনও অবস্থা আমরা মোকাবিলা করতে পারি। এই দেশটা তো আমি চিনি। দেশটা জানি। জাতির পিতা কিন্তু নিজের জন্য দল করেননি। নিজের ক্ষমতার লোভে বা অর্থ সম্পদের দল করেননি। তিনি দল করেছেন দেশের সাধারণ মানুষের জন্য।’

তিনি বলেন, ‘কাজেই আমার যেটুকু আছে তা যদি একটা মানুষকে দিতে পারি। আর সে যদি নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে এটাই আমার স্বার্থকতা।’

দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সব নেতাকর্মীকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ মেনে চলতে হবে। পচাঁত্তরের পরে যারা ক্ষমতায় এসেছে তারা তো ক্ষমতায় এসেছে খাওয়া পার্টি হিসেবে, দেওয়ার জন্য নয়। আর আওয়ামী লীগ জন্মলগ্ন থেকে মানুষকে দিয়ে যাচ্ছে। মানুষের জন্য করে যাচ্ছে। এটা হচ্ছে অন্যদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের পার্থক্য। মানুষের শক্তিটাই আমার কাছে বড় শক্তি। অন্য কোনও শক্তি নয়।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘বার বার হত্যার চেষ্টা করেছে, মারার চেষ্টা করেছে; পারেনি। বেঁচে গেছি। আল্লাহ বাঁচিয়ে রেখেছেন। আল্লাহ হায়াত দেন তাকে দিয়ে কিছু কাজ করাতে। আমি হয়তো সেই হায়াত পেয়েছি বলেই কাজ করতে পারছি। আজকে পদ্মা সেতু পাড়ি দিয়ে চলে আসছি। বাবা-মা সব হারিয়ে এই মানুষের কাছেই তো আসছি। মানুষের ভালোবাসা-দোয়া না থাকলে এতদূর আসতে পারতাম না।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি চাই, এই দেশের কোনও মানুষ গরিব থাকবে না। কোনও মানুষ না খেয়ে থাকবে না। পদ্মা সেতু হয়ে গেছে। আমাদের দক্ষিণাঞ্চলটা অর্থনৈতিকভাবে যাতে উন্নত হয়। দেশের জন্য যতটুকু কাজ করা দরকার, ততটুকু করে যাবো; এটা হচ্ছে আমার অঙ্গীকার।’

এ সময় শেখ হেলাল উদ্দিন এমপি, শেখ সালাউদ্দিন জুয়েল এমপি, গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব আলী খান, টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. বাবুল শেখ, সহ-সভাপতি মো. ইলিয়াস হোসেন, উপজেলা চেয়ারম্যান সোলায়মান বিশ্বাস, টুঙ্গিপাড়া পৌরসভার মেয়র শেখ তোজাম্মেল হক টুটুল, কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ভবেন্দ্র নাথ বিশ্বাস, সাধারণ সম্পাদক আয়নাল হোসেন শেখ, উপজেলা চেয়ারম্যান বিমল বিশ্বাস সহ টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের বিপুল সংখ্যক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে বেলা ১১টা ৪০ মিনেটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মা সেতু পাড়ি দিয়ে ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলকে সঙ্গে নিয়ে সড়কপথে পিতৃভূমি গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় আসেন।

দুপুর পৌঁনে ১২টায় প্রধানমন্ত্রী টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে জাতির পিতার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান। এরপর তিনি সেখানে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে স্বাধীনতার মহান স্থপতির প্রতি সম্মান প্রদর্শন করেন। এ সময় গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। পরে প্রধানমন্ত্রী ছেলে জয় ও মেয়ে পুতুলকে সঙ্গে নিয়ে পবিত্র ফাতেহা পাঠ, বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের শহীদ সদস্যদের রুহের মগফিরাত কামনায় বিশেষ মোনাজাতে অংশ নেন। এ ছাড়া মোনাজাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার পরিবারের সদস্যদের সুস্থতা, দীর্ঘায়ু, দেশের অব্যাহত শান্তি, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি কামনা করা হয়।

এর আগে সকালে গণভবন থেকে টুঙ্গিপাড়ার উদ্দেশে সড়কপথে রওনা দেন প্রধানমন্ত্রী। সকাল ৮টা ৪৮ মিনিটে মাওয়া টোল প্লাজায় পদ্মা সেতুর টোল দিয়ে তিনি সেতুতে উঠেন। সেতুর মাঝামাঝি গিয়ে সন্তানদের নিয়ে কিছু সময় পার করেন তিনি। সোয়া ৯টার দিকে তিনি জাজিরা প্রান্তে যান । সেখানে সেতুর উদ্বোধনী  ফলকের সামনে কিছু সময় দাঁড়ান। এরপর বিশ্রাম নেন জাজিরা প্রান্তের সার্ভিস এরিয়া-২ এ।

উদ্বোধনের পর পদ্মা সেতু দিয়ে টুঙ্গিপাড়ায় এটিই প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত প্রথম সফর। প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে কেন্দ্র করে পুরো এলাকা জুড়ে নেওয়া হয় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। টুঙ্গিপাড়া সেজে ওঠে বর্ণিল সাজে। নেতাকর্মীদের মধ্যে উৎসবের আমেজ দেখা দেয়। পরে বিকেল ৩টা ২৮ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী সড়কপথে ঢাকার উদ্দেশে টুঙ্গিপাড়া ত্যাগ করেন।

Kabir Steel Re-Rolling Mills (KSRM)
Rocket New Cash Out
Rocket New Cash Out
bKash
Community Bank
খবর বিভাগের সর্বাধিক পঠিত