শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ || ৬ বৈশাখ ১৪৩১ || ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

রেকর্ড উচ্চদরে দুই কার্গো এলএনজি কিনেছে বাংলাদেশ

বিশেষ সংবাদদাতা

১৩:৪২, ৮ অক্টোবর ২০২১

আপডেট: ১৩:৫৬, ৮ অক্টোবর ২০২১

৪৯১

রেকর্ড উচ্চদরে দুই কার্গো এলএনজি কিনেছে বাংলাদেশ

এলএনজি
এলএনজি

তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস-এলএনজির দুটি কার্গো বাংলাদেশ কিনেছে, যা এই অক্টোবরে সরবরাহ করা হচ্ছে। আর এই শিল্পের ভেতরকার সূত্র বলছে, এই দফা যে এলএনজি কেনা হলো তার দর চলে গেছে রেকর্ড উচ্চতায়। 

রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণাধীন পেট্রোবাংলার অন্তত দুটি সূত্রের বরাতে আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা রয়টার্স এই খবর দিচ্ছে। 

খবরে বলা হয়েছে, একটি কার্গো কেনা হয়েছে আন্তর্জাতিক এলএনজি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ভাইটলের কাছ থেকে। মধ্য অক্টোবরে তা সরবরাহ করা হবে। এই ক্রয়ে প্রতি মিলিয়ন ব্রিটিশ থারমাল ইউনিট (এমএমবিটিইউ)'র দাম পড়েছে ৩৫.৮৯ ডলার।  

অপর কার্গোকটি কেনা হয়েছে অপর এলএনজি ট্রেডার গানভরের কাছ থেকে। এতে দর পড়েছে প্রতি এমএমবিটিইউ ৩৬.৯৫ ডলার। 

যা এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ দর। 

এই অস্বাভাবিক দরের মধ্য কাজ চালিয়ে নেয়া রীতিমতো কঠিন হয়ে পড়েছে। দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে আমাদের আর কোনো পথও নেই। এমনটাই উদ্ধৃত করা হয়েছে পেট্রোবাংলার সূত্রকে। 

এদিকে গত বুধবার এশিয়ায় এলএনজি'র স্পট মার্কেটের দর রেকর্ড উচ্চতায় উঠে যায়। যা ছিলো ৫৬ ডলার প্রতি এমএমবিটিইউ। বৃহস্পতিবার তা আর ৩৫ ডলারে নেমে আসে। 

বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উৎপাদনের অর্ধেকেরও বেশিটা প্রাকৃতিক গ্যাসের ওপর নির্ভরশীল। এ অবস্থায় এলএনজির এই উচ্চ দর বাংলাদেশ সহ এশিয়ার বিভিন্ন দেশকেই বিপাকে ফেলেছে। 

এদিকে গত ২৭ আগস্ট দ্য ফাইন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসে প্রকাশিত একটি খবরে বলা হয়, স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি না কিনে সরকার আবারও দীর্ঘমেয়াদী চুক্তির দিকে যেতে চাইছে। দীর্ঘমেয়াদের ক্ষেত্রে বর্তমানে ৮.৫ থেকে ৯.০ ডলার প্রতি এমএমবিটিইউ দরে চুক্তি করা সম্ভব। যেমন অফারই দেওয়া হয়েছিলো এওটির পক্ষ থেকেও। কিন্তু সরকার এওটি ট্রেডিংকে স্পট মার্কেটের বিক্রেতা হিসেবে চাইলে তাদের কাছ থেকেই একটি কনসাইনমেন্ট কেনে ১৩.০৬৯ ডলার এমএমবিটিইউতে। ফলে সরকারকে ক্ষতিই গুনতে হয়। এসব কারণেই দীর্ঘমেয়াদী চুক্তিতেই ফিরতে চায় সরকার, এমনটা বলা হয়েছিলো ওই খবরে। এরই মধ্যে নতুন খবর এলো বাংলাদেশ রেকর্ড উচ্চ দরে এলএনজির দুটি কার্গো কিনেছে, স্পট মার্কেট থেকেই। 

এলএনজি কেনার ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদী চুক্তির পরিবর্তে সরকার আগেই স্পট মার্কেট থেকে কেনার সিদ্ধান্ত নেয়। যদিও একাধিক কোম্পানির সঙ্গে রয়েছে দীর্ঘ মেয়াদী চুক্তি। বছর কয়েক ধরেই আন্তর্জাতিক বিক্রেতারা বাংলাদেশে এলএনজি'র বড় বাজার দেখে, বিভিন্ন অফার নিয়ে দীর্ঘ মেয়াদী চুক্তির জন্য আসে। কিন্তু তা নানা কারণেই ফিরিয়ে দেয় বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়। 

এর মধ্যে অন্যতম অফারটি আসে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক এওটি থেকে। ২০১৭ সালের জুনে এ লক্ষে একটি সমঝোতা স্মারকও সই হয়। সে সময়ে পেট্রোবাংলার কর্মকর্তারা জানিয়েছিলেন, ওই সমঝোতা চুক্তির ফলে এওটির মাধ্যমে এলএনজি আমদানির একটি পথ সুগম হবে। দুই পক্ষের আলোচনার মাধ্যেমে পরবর্তী করনীয় ঠিক করা হবে। উভয় পক্ষ একমত হলে ভবিষ্যতে এওটির মাধ্যমে এলএনজি আমদানি করবে সরকার।

তবে পেট্রোবাংলার এই প্রত্যাশা পরবর্তীতে কার্যকর হতে দেখা যায়নি। ২০১৮ সালে সরকারের এতদসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিভাগের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠিত একটি টিম সুইজারল্যান্ডের এওটি সদর দফতর ও তাদের ইন্ডাস্ট্রিয়াল সাইট ঘুরে আসে। দায়িত্বশীল সূত্রগুলোর বরাতে তখন মিডিয়ায় খবর আসে যে, ঘুরে এসে ইতিবাচক সুপারিশ দেয় এই প্রতিনিধি দল। কিন্তু বিভিন্ন কারণে এই ক্রয় সংক্রান্ত ভেটিং সম্পন্ন হওয়ার পরেও চূড়ান্ত ক্রয় চুক্তি থেকে সরে যায় মন্ত্রণালয়। 

পরবর্তীতে, আরও ডজন খানেক কোম্পানির সঙ্গে এওটির কাছ থেকেও স্পটভিত্তিক এলএনজি কেনার সিদ্ধান্ত হয়। 

দীর্ঘ মেয়াদী চুক্তির শর্তে প্রতিযোগিতামূলক বাজারে অপেক্ষাকৃত কম দামে এবং মূল্য পরিশোধে অপেক্ষাকৃত বেশি সময় দিয়েই বাংলাদেশে এলএনজি বিক্রির প্রস্তাব দিয়েছিলো এওটি এনার্জি। সুইস কোম্পানিটি বাংলাদেশ সরকারকে মানসম্মত প্রাকৃতিক গ্যাস দেওয়ার পাশাপাশি মূল্য পরিশোধে ৪৫ দিন সময় দিচ্ছে, যা অন্য যে কোনও কোম্পানির চেয়ে অন্তত ৩০ দিন বেশি। মূল্য পরিশোধে অপেক্ষাকৃত বেশি সময় দিয়ে দেওয়া এওটির প্রস্তাবটিকে সে সময়ে দেশের জন্য লাভজনক হবে বলেই বিশেষজ্ঞরা বলেছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সরকার তা বাস্তবায়ন করেনি। 

তবে ২০১৭ সালের জুলাইয়ে কাতার গ্যাসের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদী এলএনজি কেনার চুক্তি করে মন্ত্রণালয়। সে চুক্তি অনুযায়ী  ১৫ বছর ধরে, প্রতিবছর ২৫ লাখ মেট্রিক টন করে এলএনজি বাংলাদেশে সরবরাহ করার কথা রয়েছে কাতার গ্যাসের। এসব সরবরাহে দাম নির্ধারিত হয় আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম অনুযায়ী।

Kabir Steel Re-Rolling Mills (KSRM)
Rocket New Cash Out
Rocket New Cash Out
bKash
Community Bank
খবর বিভাগের সর্বাধিক পঠিত