ইভ্যালিকে দেউলিয়া ঘোষণার পরিকল্পনা ছিল এমডি রাসেলের
ইভ্যালিকে দেউলিয়া ঘোষণার পরিকল্পনা ছিল এমডি রাসেলের
ইভ্যালির সিইও রাসেল, তার স্ত্রী ও প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিনকে গ্রেফতার করে র্যাব |
আলোচিত ও বিতর্কিত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির দেনা দিনকে দিন বাড়ছিল। এমন বাস্তবতায় প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. রাসেল একে দেউলিয়া ঘোষণার পরিকল্পনা করেছিলেন। শুক্রবার (১৭ সেপ্টেম্বর) কুর্মিটোলায় সদরদপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানিয়েছে র্যাব।
**আদালতে নেওয়া হয়েছে ইভ্যালির চেয়ারম্যান ও এমডিকে
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়,২০২১ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ইভ্যালির দেনা ৪০৩ কোটি টাকা। আর প্রতিষ্ঠানটির হাতে থাকা সম্পদের মূল্য ৬৫ কোটি টাকা। বিভিন্ন পণ্য বাবদ গ্রাহকদের কাছ থেকে কোম্পানিটি নিয়েছিল ২১৪ কোটি টাকা। ইভ্যালির কাছে বিভিন্ন কোম্পানি ও গ্রাহকের পাওনা ১৯০ কোটি টাকা।
ব্রিফিংয়ে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক খন্দকার আল মঈন জানান, ইভ্যালির সিইও রাসেল, তার স্ত্রী ও প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিনকে গতকাল বৃহস্পতিবার মোহাম্মদপুরের বাসা থেকে গ্রেফতার করে র্যাব। গ্রেফতারের পর তাদের র্যাব সদর দপ্তরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই তাদের জিজ্ঞাসাবাদ চলে বলে জানিয়েছেন বাহিনীর আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
**ইভ্যালির এমডি রাসেল ও তার স্ত্রী নাসরিন গ্রেফতার
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ব্যবসায়িক বিক্রি বাড়াতে গ্রাহকদের প্রতিনিয়ত চাহিদা তৈরি হয় এ ধরনের পণ্যকে বেছে নেয় ইভ্যালি। যেমন- মোবাইল, টিভি, ফ্রিজ, এসি, মোটরবাইক, গাড়ী, গৃহস্থলীপণ্য, প্রসাধনী, প্যাকেজ ট্যুর, হোটেল বুকিং, জুয়েলারী, স্বাস্থ্যসেবা সামগ্রী ও ফার্নিচার ইত্যাদি। এসব পণ্যের মূল্য ছাড়ের ফলে ব্যাপক চাহিদা তৈরি হয়। ধীরে ধীরে প্রতিষ্ঠানের বিশাল আকারে দায় তৈরি হয়।
ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, গ্রেফতার রাসেল ও তার স্ত্রীর ব্যবসায়িক অপকৌশল ছিল নতুন গ্রাহকের উপর দায় চাপিয়ে দিয়ে পুরাতন গ্রাহক ও সরবরাহকারীর দায়ের (লায়াবেলিটিস) অল্প অল্প করে পরিশোধ করা। অর্থাৎ ‘সায় ট্রান্সফার’ এর মাধ্যমে দুরভিসন্ধিমূলক অপকৌশল চালিয়ে যাচ্ছিল ইভ্যালি। প্রতিষ্ঠানটির নেওয়ার্কে যত গ্রাহক তৈরি হতো, দায় ততো বাড়ত। গ্রেফতার রাসেল জেনেশুনে এ নেতিবাচক স্ট্র্যাটেজি গ্রহণ করেন বলে জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন।
কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, তিনি (মো. রাসেল) ও তার স্ত্রী পদাধিকারবলে মাসিক ৫ লাখ টাকা করে বেতন নিতেন। তারা কোম্পানির অর্থে ব্যক্তিগত দুটি দামি গাড়ি (রেঞ্জ রোভার ও অডি) ব্যবহার করেন। এছাড়া কোম্পানীর প্রায় ২৫-৩০টি যানবাহন রয়েছে। ব্যক্তি পর্যায়ে সাভারে রাসেলের কয়েক কোটি টাকা মূল্যের জায়গা-জমিসহ অন্যান্য সম্পদ রয়েছে।
মো. রাসেল-
রাসেল ২০০৭ সালে একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স এবং পরবর্তীতে ২০১৩ সালে এমবিএ সম্পন্ন করেছেন। তিনি ২০০৯ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত একটি কোচিং সেন্টারে শিক্ষকতা করেন। ২০১১ সালে ব্যাংকিং সেক্টরে চাকরি শুরু করেন।
প্রায় ৬ বছর চাকরির পর ২০১৭ সালে ব্যাংকের চাকরি ছেড়ে ব্যবসা শুরু করেন। তিনি প্রায় এক বছর শিশুদের ব্যবহার্য একটি আইটেম নিয়ে ব্যবসা করেন এবং পরে তিনি ওই ব্যবসা বিক্রি করে দেন। ২০১৮ সালে আগের ব্যবসালব্ধ অর্থ দিয়ে ইভ্যালি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেন। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে ইভ্যালির কার্যক্রম শুরু হয়। কোম্পানিতে তিনি সিইও এবং তার স্ত্রী চেয়ারম্যান পদে কাজ শুরু করেন।
বেশ কিছিুদিন ধরেই আলোচনায় দেশের বিতর্কিত এই ই কমার্স সাইটটি। তাদের ব্যবসার পদ্ধতি নিয়ে নানা মহল থেকে প্রশ্ন উঠেছে। বাণিজ্য মন্ত্রণায়ল এবং বাংলাদেশ ব্যাংক ইভ্যালির ব্যবসার পদ্ধতি নিয়ে তদন্ত করছে। ইতোমধ্যে ইভ্যালির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ রাসেলের বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
এদিকে বৃহস্পতিবার সকালে, ইভ্যালির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ রাসেলের বিরুদ্ধে রাজধানীর গুলশান থানায় মামলা করেছেন আরিফ বাকের নামে এক ভুক্তভোগী গ্রাহক।
আরও পড়ুন
জনপ্রিয়
- ঋণখেলাপীর মিথ্যা মামলায় ডিএমডিকে হয়রানি, এবি ব্যাংকের প্রতিবাদ
- পাইলট ক্যাপ্টেন নওশাদ কাইয়ুম ক্লিনিক্যালি ডেড, লাইফসাপোর্ট খোলার সিদ্ধান্ত
- সরকার ই-কমার্স ফ্রেন্ডলি, এখনই ২০০০ কোটি টাকার মার্কেট এক্সপ্লোর করা সম্ভব
- জাতিসংঘ ৭৭-তম অধিবেশনে যোগ দিচ্ছেন শেখ হাসিনা, কি থাকছে?
- আরজে কিবরিয়ার অনুষ্ঠানে এসে ২৫ বছর পর বাবা-মাকে খুঁজে পেলেন মেয়ে
- বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৩তম জন্মদিন আজ
- ঢাকায় বসবে ২৫৮কি.মি. পাতাল রেল, কোথা থেকে কোথায়?
- করোনা পরীক্ষায় প্রতারণাকে নির্মম বাণিজ্য বললেন ওবায়দুল কাদের
- মেট্রোরেলের আদ্যোপান্ত, ডেডলাইন জয়ে ছুটছে কর্তৃপক্ষ
- বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস
`বঙ্গবন্ধু ফিরে এলে তোমার স্বপ্নের স্বাধীন বাংলায়`