বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ || ১১ বৈশাখ ১৪৩১ || ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

পতেঙ্গার লালদিয়ার চরে উচ্ছেদ অভিযান

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চট্টগ্রাম

১২:৫৩, ১ মার্চ ২০২১

৬৯৬

পতেঙ্গার লালদিয়ার চরে উচ্ছেদ অভিযান

চট্টগ্রামের পতেঙ্গার লালদিয়ার চরে বন্দর কর্তৃপক্ষের উচ্ছেদ অভিযান চলছে। ছয় ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে সোমবার (১ মার্চ) সকাল সোয়া ১০টা থেকে শুরু হওয়া উচ্ছেদ অভিযান চলছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অভিযান এলাকায় এক হাজারেরও বেশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।

অভিযান শুরুর আগে এক ব্রিফিংয়ে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহজাহান বলেন, ইতোমধ্যে প্রায় ৯০ শতাংশ লোকজন তাদের বাড়িঘর ছেড়ে চলে গেছেন। যারা রয়ে গিয়েছিলেন, শেষ মুহুর্তে ঘরবাড়ি ছাড়ছেন। আর যারা এখনও নিজেদের স্থাপনা সরিয়ে নিতে পারেননি তারা চাইলে কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা পাবেন। অভিযানের প্রথমদিন শুধু বন্দরের জায়গাটুকু চিহ্নিত করে বেড়া দিয়ে দেয়া হবে বলেও জানান চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহজাহান।

সরেজমিনে দেখা যায়, সোমবার সকাল ৭টা থেকে পতেঙ্গা বোট ক্লাব প্রাঙ্গণে সমবেত হতে থাকেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য ও বন্দর কর্তৃপক্ষের শ্রমিকরা। এর আগেই সেখানে প্রস্তুত ছিল বুলডোজার, ট্রাক, অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি ও সাঁজোয়া যান।

চেয়ারম্যানের ব্রিফিংয়ের পরপরই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও বন্দর শ্রমিকরা জমিতে বেষ্টনি দেওয়ার কাজ শুরু করে।

এর আগে রোববার দিনভর বন্দর ভবনে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করে উচ্ছেদ অভিযানের ‘অ্যাকশন প্ল্যান’ তৈরি করা হয়।

জানা গেছে, নগরের পতেঙ্গা এলাকার লালদিয়ার চরের ৫২ একর ভূমিতে বাস করে আসছিলেন ২৩শ’ পরিবারের অন্তত ১৪ হাজার মানুষ। দুদিন ধরে সেখানে উচ্ছেদ অভিযান চলবে। এ অভিযানে ৪৯ বছরে গড়ে ওঠা কয়েক হাজার স্থাপনা তুলে দেয়া হবে। এর মধ্যে রয়েছে বাড়ি, স্কুলভবন, ক্লাবঘর ইত্যাদি। ৮ মার্চের মধ্যে উচ্ছেদ অভিযানের বিস্তারিত প্রতিবেদন আদালতে উপস্থাপন করার বাধ্যবাধকতা আছে।

১৯৭২ সালে বিমান বাহিনীর জহুরুল হক বিমান ঘাঁটি সম্প্রসারণের কাজের কারণে ঘাঁটি সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দারা নিজেদের ভিটেমাটি ছেড়ে লালদিয়ার চরে বসতি স্থাপন করেন। স্থায়ী বন্দোবস্তের কথা থাকলেও, তা পাওয়া যায়নি। এখন উচ্চ আদালতের নির্দেশে তাদেরকে উচ্ছেদের উদ্যোগ নিয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ।

২০০৫ সালে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ এই লালদিয়ার চরের বাসিন্দাদের ওপর প্রথম উচ্ছেদ অভিযান চালায়। ইনকনট্রেড লিমিটেডের একটি কন্টেইনার ডিপো স্থাপনের জন্য ওই সময় লালদিয়ার চরের পাঁচশ পরিবারকে উচ্ছেদ করা হয়। পরে উচ্চ আদালতের নির্দেশে ২০১৯ সালের ২২ জুলাই ২৫০ স্থাপনা উচ্ছেদ করে প্রায় ২০ একর জমি দখলমুক্ত করে বন্দর কর্তৃপক্ষ।

দশ বছর আগে কর্ণফুলী নদী রক্ষায় নির্দেশনা চেয়ে মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি) রিট করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৬ সালের ১৬ অগাস্ট দেয়া এক রায়ে হাইকোর্ট কর্ণফুলী নদীর তীরে থাকা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের নির্দেশ দেন। সর্বশেষ গত বছরের ৮ ডিসেম্বর ‘জরিপ অনুযায়ী’ বন্দর এলাকার লালদিয়ার চরে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে আদালতের নির্দেশনা দুই মাসের মধ্যে বাস্তবায়নের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।

Kabir Steel Re-Rolling Mills (KSRM)
Rocket New Cash Out
Rocket New Cash Out
bKash
Community Bank
খবর বিভাগের সর্বাধিক পঠিত